শুনশান বিজেপি-র পার্টি অফিস চত্বর
প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও কারণে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু ভবানীপুর উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার দিনে গেরুয়া শিবিরের রাজ্য নেতারা কেউই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন না। দলের পক্ষে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিলেন সাধারণত সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে থাকা রাজ্য সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের জন্য ভিডিয়ো বার্তা পাঠালেন নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর ভবানীপুরের প্রার্থী যাবতীয় প্রতিক্রিয়া জানালেন ফেসবুক, টুইটারে। ভোট প্রচারে বড় ভূমিকা নিলেও ফল ঘোষণার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেননি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নেট মাধ্যমেও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।
ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর প্রাথমিক প্রবণতায় যখন দিনের ছবিটা মোটামুটি পরিষ্কার, তখন থেকেই নীরবতা দেখা গিয়েছে বিজেপি-র রাজ্য দফতরে। তৃণমূলের ঝোড়ো ইনিংস দেখে কর্মী-সমর্থকরা যখন বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতেছেন, তখন শুনশান বিজেপি-র পার্টি অফিস চত্বর। খাঁ খাঁ করছে আশেপাশের এলাকা। নিরাপত্তার স্বার্থে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশও। ভোট গণনার শেষ মুহূর্তে এসেও সেই ছবিই বজায় থাকল।
ভবানীপুর বিপুল ভোটে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিকে ভোটের ফল নিয়ে নৈঃশব্দ বিজেপি-র সদর দফতরে। দেখা মেলেনি নেতাদের। নেই কোনও সাংবাদিক বৈঠকও। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ একটি প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে গেরুয়া শিবির। তাতে রবিবার ঘোষিত তিন আসনের ফলই দলের কাছে অনভিপ্রেত ছিল বলে জানানো হয়েছে।
রবিবার জয় নিশ্চিত হতেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নন্দীগ্রামের চক্রান্ত নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। উল্টো দিকে, ভবানীপুরে ভোট নিয়ে প্রিয়ঙ্কার দাবি, ‘‘ঠিক ভাবে ভোট হয়নি। ছাপ্পা, রিগিং চলেছে।’’ নেটমাধ্যমেও একটি পোস্ট করেছেন ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘মানুষের স্নেহ আর নেতা-কর্মীদের দলের প্রতি ভালবাসা দেখে আমি অভিভূত। তাঁরা আমার থেকেও অনেক বেশি খেটেছেন। আমি তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। মানুষের সেবা এবং আরও কাজ করব আমি।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘শাসক দল যে ভাবে ভয় দেখিয়েছে, আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি করেছে, তাতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই আমি চালিয়ে যাব।’’
ভবানীপুর জয়ের পর মমতাকে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত বলেন, ‘‘জনগণের রায় বরাবর মাথা পেতে নিয়েছে বিজেপি। তবে এই নির্বাচনে জনতার রায় কতটা প্রতিভাত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছেই। মাত্র ৫৭ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে এসেছিলেন। একটি বিরাট অংশের মানুষ ভোট দিতে আসতে পারেননি বা আসেননি। ভোটের আগে ভবানীপুর থেকে বিজেপি-কে ধুয়ে মুছে সাফ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল। সেটা ওরা পারেনি। এত সংখ্যক মানুষের সমর্থন পেয়ে আমরা আপ্লুত।’’