—প্রতীকী চিত্র।
ক্লাসের শুরুতেই রোল কলের পাট মিটছে ধীরে ধীরে! পড়ুয়াদের আর ‘ইয়েস স্যর, ইয়েস ম্যাম’ বলে হাত তুলে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে হবে না। কর্পোরেট ধাঁচেই এ বার বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা নেওয়ার ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বিভিন্ন স্কুলে। বসানো হচ্ছে ‘ফেস রেকগনিশন অ্যাটেনড্যান্স সিস্টেম’। পড়ুয়ারা ওই মেশিনের সামনে দাঁড়ালেই হাজিরা নথিভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, তারা কখন ঢুকছে বা বেরোচ্ছে— স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সেই বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে অভিভাবকদের মোবাইলেও। প্রায় একই রকম ব্যবস্থা চালু হল হাওড়ার ডোমজুড়ের সরকার পোষিত বাঁকড়া মোবারক হোসেন বালিকা বিদ্যালয়ে।
পড়ুয়ারা স্কুলে আসার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্কুলে আসছে না বলে অভিযোগ অনেক দিনের। পড়ুয়াদের কেউ কেউ নির্দিষ্ট সময়ের আগে স্কুল থেকে চলে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠে থাকে। এই সব বিষয় নজরে রেখে বিভিন্ন স্কুলে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করা হয়েছে। আবার কিছু স্কুলে ডিজ়িটাল আইকার্ডের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ওই কার্ড নিয়ে স্কুলে ঢুকলেই অভিভাবকদের কাছে বার্তা চলে যাবে যে, তাদের সন্তান স্কুলে পৌঁছেছে। বাঁকড়ার স্কুলে সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি নুরাজ মোল্লা বলেন, ‘‘স্কুলের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ করে আমরা ছাত্রীদের জন্য এই ডিজিটাল হাজিরা ব্যবস্থা চালু করলাম। আমাদের স্কুলে প্রায় এক হাজার ছাত্রী রয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকের অভিভাবকদের মোবাইলে ছাত্রীদের স্কুলে উপস্থিতি সংক্রান্ত বার্তা পৌঁছে যাবে। সেই ভাবেই স্কুলের প্রবেশদ্বারে সেন্সর মেশিন বসানো হয়েছে।’’
শুক্রবার এই নতুন ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ। স্কুল কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বিধায়ক বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোর পর বাবা-মায়েরা স্বাভাবিক ভাবেই একটু চিন্তায় থাকেন। ছেলে বা মেয়ে স্কুলে পৌঁছল কি না, তা নিয়ে। এখন আর সেই চিন্তা থাকবে না। ছাত্রীরা স্কুলে ঢুকলেই তাদের বাবা-মায়েদের ফোনে মেসেজ চলে যাবে। সময়ের আগে কেউ যদি স্কুল থেকে বেরোনোর চেষ্টা করে, সেটাও হবে না এখন আর।’’
এতে নিশ্চিন্ত হলেন অভিভাবকেরাও। অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর মা বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েরা ঠিক মতো স্কুলে পৌঁছল কি না, আমরা সহজেই জানতে পারব। এটা সত্যিই ভাল ব্যাপার। আমাদের দুশ্চিন্তা দূর হবে।’’