Semester system in Primary

প্রাথমিকেও সিমেস্টার! প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা পদ্ধতিতে বদল, পাল্টাবে সিলেবাসও

শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে নতুন পদ্ধতির কথা ঘোষণা করেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। নতুন পদ্ধতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্রেডিট বেসড সিমেস্টার সিস্টেম’।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:০০
Semester system start in Primary education from 2025

প্রাথমিকে শুরু হচ্ছে সিমেস্টার সিস্টেম। —ফাইল চিত্র।

এ বার প্রাথমিকেও সিমেস্টার পদ্ধতি শুরু হচ্ছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই পদ্ধতিতেই পড়ুয়াদের পরীক্ষা এবং মূল্যায়ন করা হবে। বছরে এক বার নয়, দু’বার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পরীক্ষা পদ্ধতির পাশাপাশি পাঠ্যক্রমেও (সিলেবাস) বড় বদল আনা হচ্ছে।

Advertisement

শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে নতুন পদ্ধতির কথা ঘোষণা করেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। নতুন পদ্ধতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্রেডিট বেসড সিমেস্টার সিস্টেম’। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই পদ্ধতিতে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের মূল্যায়ন হবে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে এই পদ্ধতি চালু হচ্ছে। পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে পুরনো পাঠ্যক্রমে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিকের পাঠ্যক্রমে বদল আসবে। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে শিক্ষা দফতরের অনুমতি মিলেছে।

পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, আগে বছরে এক বারই পরীক্ষা নেওয়া হত। সেই পরীক্ষার ফলাফলের উপর বিশ্লেষণ করে পড়ুয়াদের পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার ব্যবস্থা ছিল। তবে এ বার থেকে ১০০ নম্বরে পরীক্ষা দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে জুন এবং জুলাই থেকে ডিসেম্বর— গোটা বছরকে এই দু’ভাগে ভাগ করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রথম সিমেস্টার হবে ৪০ নম্বরে। পরের পরীক্ষা হবে ৬০ নম্বরে।

৪০ নম্বরের পরীক্ষা কোনও লিখিত আকারে হবে না। ৪০ নম্বরের মধ্যে ২০ নম্বর থাকবে পড়ুয়াদের উপস্থিতি, ক্লাসে আচরণ ইত্যাদি বিষয় মূল্যায়নের উপর। বাকি ২০ থাকবে বিভিন্ন প্রজেক্টের ভিত্তিতে। দ্বিতীয় সিমেস্টার হবে পুরোটাই লিখিত। তবে সেখানেও বদল আনা হয়েছে। এ বার থেকে প্রশ্নপত্র তৈরি করার দায়িত্ব আর থাকছে না স্কুলের হাতে। প্রাথমিকের প্রশ্নপত্র তৈরি করবে পর্ষদই। গোটা রাজ্যে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে। তবে খাতা দেখবে সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই।

(বাঁ দিক থেকে) প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সেক্রেটারি রঞ্জন ঝাঁ, সভাপতি গৌতম পাল, ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার এবং কলকাতা প্রাথমিক জেলা পরিষদের সভাপতি কার্তিক মান্না।

(বাঁ দিক থেকে) প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সেক্রেটারি রঞ্জন ঝাঁ, সভাপতি গৌতম পাল, ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার এবং কলকাতা প্রাথমিক জেলা পরিষদের সভাপতি কার্তিক মান্না। —নিজস্ব ছবি।

পড়ুয়াদের জন্য থাকছে ‘ক্রেডিট স্কোর’ও। প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য প্রত্যেক বছর মোট ৩৭৬ ঘণ্টা ক্লাসের সময় ঠিক করা হয়েছে। তার উপর দেওয়া হবে ‘ক্রেডিট স্কোর’। সর্বোচ্চ ‘ক্রেডিট স্কোর’ স্থির করা হয়েছে ১৩.৫। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে বছরে ক্লাস নেওয়া হবে ৪৬০ ঘণ্টা। এই তিন শ্রেণির জন্য সর্বোচ্চ ‘ক্রেডিট স্কোর’ স্থির করা হয়েছে ১৬.৫।

নতুন ব্যবস্থা নিয়ে পর্ষদ সভাপতি বলেন, ‘‘সরকারের সাহায্যে আমরা এ ধরনের সাহসী পদক্ষেপ করতে পেরেছি। ছোট থেকে এ ধরনের মূল্যায়ন পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে গেলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতে কোনও অসুবিধা হবে না।’’ এ প্রসঙ্গে পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার বলেন, ‘‘আমরা চাই বুনিয়াদি শিক্ষা আরও শক্তিশালী হোক। সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নতুন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও দ্রুত এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন