রাজবাঁধে চালকদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
বেতন বৃদ্ধি-সহ বেশ কিছু দাবিতে কয়েক দিন ধরে কাজ বন্ধ করেছেন কাঁকসার রাজবাঁধ চটি লাগোয়া একটি রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস বটলিং প্লান্টের ট্রাক চালকেরা। সোমবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তাঁরা। তাঁদের মূল দাবি, দশ হাজার টাকা মাসিক বেতন ও হাতখরচ বাবদ তিনশো টাকা দিতে হবে। বৈঠকের পরে সংস্থার কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, ট্রাক চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দ্রুত চালকদের দাবিও পূরণ করা হবে।
ওই রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস বটলিং সংস্থা থেকে দুই বর্ধমান-সহ বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার মতো জেলাগুলিতে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ হয়। বিহার ও ঝাড়খণ্ডেও যায় সিলিন্ডার। বিভিন্ন পরিবহণ সংস্থার মাধ্যমে প্রায় দু’শো ট্রাকে সিলিন্ডার পরিবহণ হয়। এই সব ট্রাকের চালকেরাই এ দিন প্লান্টের সামনে জমায়েত করে দীর্ঘ দিন কম বেতন দেওয়া হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের দাবি, ছয় চাকার ট্রাকের চালকেরা তিন হাজার টাকা ও দশ চাকা ট্রাকের চালকেরা চার হাজার টাকা বেতন পান।
চালকদের অভিযোগ, রবিবার বা ছুটির দিনে ডিউটি করলেও আলাদা কোনও বোনাস দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। গাড়ি বোঝাই করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে কোনও সহায়ক দেওয়া হয় না। ফলে, ভিড় রাস্তায় গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার ট্রাকে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। অভিযোগ, প্লান্টের ভিতরেও অনেক সময়ে বিভিন্ন কাজ করানো হচ্ছে চালকদের দিয়ে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার জানানোর পরেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি তাঁদের। চালকদের তরফে গণেশ মাঝি, ইনজামামুল হকেরা বলেন, “এত অল্প টাকায় সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ উদাসীন। অথচ, আমাদের প্রতি দিনই ডিউটি করে যেতে হচ্ছে।”
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক ৫৫০ টন গ্যাস বটলিং করা হয় এই প্লান্টে। গত কয়েক দিন অল্প পরিমাণে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ হলেও সোমবার সকাল থেকে ফের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে সংস্থার উলুবেড়িয়া প্লান্ট থেকে দুর্গাপুরে সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়। চালকেরা এ দিন জমায়েত করে দাবি তোলেন, বেতন বাড়ানো না হলে তাঁরা কাজে ফিরবেন না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চালকদের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। কর্তৃপক্ষের তরফে দেবাশিস দে বলেন, “গ্যাস সরবরাহ চালু হয়েছে। নতুন বছরের গোড়ার দিকে চালকদের দাবি নিয়ে কর্তৃপক্ষ চিন্তাভাবনা করবে।”