West Bengal Panchayat Election 2023

ছোট বৌ তৃণমূল প্রার্থী, বিক্ষুব্ধ মেজ বৌ প্রতিদ্বন্দ্বী! ভাতারের পঞ্চায়েতে ‘গৃহযুদ্ধ’

দুই জায়ের লড়াই ভরপুর উপভোগ করছেন গ্রামবাসী। দুই জা তাঁদের কাছে ভোটভিক্ষা করছেন। প্রতিবেশীদের টিপ্পনী, হার যারই হোক, জিতবে তো সেই রায় পরিবারই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ ২০:১২
TMC and Congress candidate of Bhatar Panchayat are sisters-in-law

রায় পরিবারের মেজ বৌ বর্ণালি হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী (বাঁ দিকে)। ছোট বৌ মণিমালা রায় লড়ছেন তৃণমূলের হয়ে (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

কংগ্রেসের সমর্থক হিসেবেই পরিচিতি ভাতারের রায় পরিবারের। বাংলায় পরিবর্তনের পর অবশ্য সবাই তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটে টিকিটই পেয়েছেন বাড়ির ছোট বৌ। কিন্তু হাতফুল প্রতীক নিয়ে ওই পঞ্চায়েতে লড়ার ইচ্ছে ছিল মেজ বৌয়েরও। তৃণমূলের কাছ থেকে টিকিট না পেয়ে তিনি যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। বর্ধমানের ভাতারের আমরুন-২ ব্লকের ছাতনি গ্রামের ২১৮ নম্বর বুথ এখন রায় পরিবারের দুই বৌয়ের যুদ্ধক্ষেত্র। দুই বৌ-ই পঞ্চায়েত ভোটে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। পরিবারের সিংহভাগ সদস্য কোন দিকে ঝুঁকছেন? দুই বৌ-ই বলছেন তাঁর দিকে। সব মিলিয়ে জমজমাট লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত ভাতারের ওই পঞ্চায়েত।

রায় পরিবারের ছোট বৌ মণিমালা রায় তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে পঞ্চায়েতে লড়ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী তাঁর মেজ জা বর্ণালী রায়। তিনি কংগ্রেসের টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন। তবে দুই বৌ বলছেন, রাজনৈতিক লড়াই বাড়ির বাইরে। পরিবারের মধ্যে তাঁরা দুই বোনের মতো। রায় পরিবারের দাবি, ১৯৭৮ সাল থেকে তারা কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরে তৃণমূলকে সমর্থন করেন বাড়ির প্রাপ্তবয়স্করা। বরাবর তাঁরা রাজনৈতিক ভাবে সচেতন। বস্তুত, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমরুন-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা ছিলেন পরিবারের মেজ বৌ বর্ণালী। তবে এই পঞ্চায়েত ভোটে তাঁকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। পরিবর্তে টিকিট পেয়েছেন ছোট জা মণিমালা। অন্য দিকে, পঞ্চায়েত লড়তে হাত শিবিরে যোগ দেন বর্ণালী।

Advertisement

কংগ্রেস প্রার্থী বর্ণালীর স্বামী দেবপ্রসন্ন রায়ের কথায়, ‘‘২০১৩ সালে আমারুন-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পর একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ফলে প্রায় দু’বছর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ ছিল। উন্নয়নের কাজও থেমে যায়। এ বারে ভেবেছিলাম বোর্ড গঠন করে তৃণমূল সরকারের উন্নয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে দেব আমরা। আমার স্ত্রীর নাম তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে ঘোষণাও করেছিল। কিন্তু মনোনয়ন দাখিলের শেষ মুহূর্তে ভাইয়ের স্ত্রী মণিমালারা নাম ঘোষণা করা হয়। মানুষের সেবার জন্য আমার স্ত্রী কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন।’’ অন্য দিকে, তৃণমূল প্রার্থী মণিমালার স্বামী দেবদূত রায়ের দাবি, দল তাঁর স্ত্রীকে আগেই প্রার্থী করেছে। কিন্তু বৌদি টিকিট না পেয়ে অন্য দলে যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি দেবদূত বলছেন, ‘‘আশা করি, রাজনৈতিক লড়াই পারিবারে কোনও প্রভাব ফেলবে না।’’

তবে পঞ্চায়েত ভোটে ছাতনি গ্রামের রায় পরিবারের দুই জায়ের লড়াই ভরপুর উপভোগ করছেন গ্রামবাসী। দুই জা তাঁদের কাছে ভোটভিক্ষা করছেন আলাদা আলাদা করে। প্রতিবেশীদের টিপ্পনী, হার যারই হোক, জিতবে তো সেই রায় পরিবারই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement