স্কুলের সামনে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের ভর্তির ফি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অভিযোগে মঙ্গলবার স্কুলের গেট আটকে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। আটকে দেওয়া হল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। পরিস্থিতি এমন হল যে, স্কুলে ছুটতে হল পুলিশকে। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বনপাশ স্টেশন শিক্ষানিকেতনের ঘটনা। অভিভাবকদের বিক্ষোভের জেরে প্রায় দু’ঘণ্টা বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের পঠনপাঠন।
ভাতারের বনপাশ স্টেশন শিক্ষানিকেতনে পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় এক হাজার। অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের পরীক্ষার পর নতুন বর্ষে পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য প্রায় ৯০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ক্লাসের এই ভর্তির ফি ৮৫০ টাকা থেকে ৮৮০ টাকা করা হয়েছিল। নতুন ক্লাসে ভর্তি হতে এসে ইতিমধ্যে অনেক পড়ুয়াকে ঘুরে যেতে হয়েছে ফি বৃদ্ধির কারণে। সঞ্জয় ঘোষ কর্মকার নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘এই অঞ্চলে আরও দুটি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। তারা সরকার নির্ধারিত ফি নিয়েই ভর্তি করছে পড়ুয়াদের। অথচ বনপাশ স্টেশন শিক্ষানিকেতনের ফি অস্বাভাবিক বেশি নেওয়া হচ্ছিল। এই এলাকায় প্রচুর জনমজুর পরিবারের বসবাস। তাদের পক্ষে ৮৫০-৯০০ টাকা ফি দেওয়া সম্ভব নয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এ জন্য কি ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হবে!’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, ফি বৃদ্ধির অভিযোগে গত দু’দিন ধরেই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছিল। অভিভাবকেরা স্কুলের সামনে পোস্টার দিয়ে প্রতিবাদ করছিলেন। মঙ্গলবার সেই বিক্ষোভ তুমুল আকার নিয়েছে। স্কুল শুরুর আগে থেকেই অভিভাবকেরা স্কুলের সামনে জড়ো হন। তাঁরা গেটের মুখে জমায়েত হতে শুরু করেন। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আসতেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। চলে বিক্ষোভ।
শেষমেশ ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক, পুলিশ এবং পরিচালন কমিটির সদস্যেরা মিলে অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ঘণ্টা দুই পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে খবর। ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক অনন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা স্কুলের অনুদানের জন্য ১৬০ টাকা, কম্পিউটার শিক্ষার জন্য ৪৫০ টাকা করে ফি ধার্য করেছিলাম। কিন্তু অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আপত্তি ওঠে। তাই আলোচনা করে ঠিক হয়েছে, সরকারি নির্ধারিত ২৪০ টাকা ফি এবং ১১০ টাকা অনুদান নিয়ে মোট ৩৫০ টাকা নেওয়া হবে। অভিভাবকেরা তাতে রাজি হয়েছেন। বিষয়টি মিটে গিয়েছে।’’
শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, আলোচনার পর কর্তৃপক্ষ ফি কমানোর ঘোষণা করলে আবার স্কুল শুরু হয়। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তির ফি কমানোর ঘোষণা করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।