Bird Smuggling

বর্ধমান হয়েই কি পাখি পাচারের রুট

শুক্রবার ধৃত মহম্মদ সোনু বিহারের পটনার বাসিন্দা। কিছু দিন আগেও বর্ধমান স্টেশন চত্বর থেকে চারটে শিকারি পাখি-সহ একজনকে গ্রেফতার করে আরপিএফ।

Advertisement
সৌমেন দত্ত
শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৩
পেরিগ্রিন ফ্যালকন।

পেরিগ্রিন ফ্যালকন। —ফাইল চিত্র।

কয়েক বছর আগেও শীতের মুখে বর্ধমান স্টেশন বা তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া কচ্ছপ উদ্ধার করত বন দফতর বা পুলিশ। এখন কচ্ছপের বদলে শীত পড়লেই টিয়া, ময়না কিংবা শিকারি পাখি উদ্ধার হচ্ছে বর্ধমানে। শুক্রবার সকালেই বর্ধমান স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ‘পেরিগ্রিন ফ্যালকন’ প্রজাতির চারটে শিকারি পাখি উদ্ধার করে আরপিএফ। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়। পাখিগুলিকে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বন দফতর, পুলিশ ও আরপিএফের দাবি, পাখির চোরাকারবারিরা বিহার বা ঝাড়খণ্ড থেকে ট্রেনে চেপে বর্ধমান স্টেশনে এসে রাস্তা বদলে ফেলছে নিয়মিত। তখনই কেউ কেউ ধরা পড়ে যাচ্ছে। আর ধরা না পড়লে বর্ধমানেই হাত বদল হয়ে যাচ্ছে টিয়া, ময়না, মুনিয়া থেকে শিকারি পাখিরা। মোবাইলের নানা অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যাচ্ছে।

শুক্রবার ধৃত মহম্মদ সোনু বিহারের পটনার বাসিন্দা। কিছু দিন আগেও বর্ধমান স্টেশন চত্বর থেকে চারটে শিকারি পাখি-সহ একজনকে গ্রেফতার করে আরপিএফ। বন দফতরের কর্তাদের দাবি, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী শিকারি পাখি তো বটেই, টিয়া পাখিও বিক্রি করা যায় না। পোষাও যায় না। নিষিদ্ধ মুনিয়া-ময়নাও। কিন্তু এত কড়াকড়ির পরেও বাজারে চলে আসছে ওই সব পাখি। বন দফতরের দাবি, পাখির বেশির ভাগই আসছে বিহার বা ঝাড়খণ্ড থেকে। ব্যান্ডেল, নৈহাটি, শিয়ালদহ বা হাওড়া স্টেশনে কড়াকড়ি বেশি হওয়ায় বর্ধমানকেই রুট বদলের জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে। বন দফতরের দাবি, বিহার থেকে পাখি নিয়ে এক দল ট্রেনে আসছে বর্ধমান পর্যন্ত। যাঁরা আসছেন, তাঁরা মূলত ‘ক্যারিয়ার’। জেলা বন দফতরের আধিকারিক কাজল বিশ্বাস জানিয়েছেন, শুক্রবার পাচারের সময় উদ্ধার হওয়া পাখিগুলির চোখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। সাধারণত চোখে না দেখতে পেলে পাখিরা আওয়াজ করে না। উদ্ধার হওয়া পাখিগুলিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তারপরে প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হবে।

বন্যপ্রাণী দুর্নীতি-দমন শাখার দাবি, এক একটি টিয়া, ময়নার মতো পাখি দেড়-দু’হাজার টাকায় বেআইনি পথে বিক্রি হয়। আর শিকারি পাখিগুলি ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়।

ওই শাখার প্রাক্তন আঞ্চলিক অধিকর্তা (কলকাতা) অগ্নি মিত্র বলেন, “মূলত বাড়িতে পোষার জন্যই ওই সব পাখি কেনা হয়। এ দেশের লোকেরাই ভাল দাম দিয়ে ওই সব পাখি কেনেন।” আরপিএফ জানিয়েছে, এ দিন নজরদারি চালানোর সময় ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে থলি হাতে একজনকে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয়। তল্লাশি করতেই থলি থেকে দু’টি খাঁচায় চারটে পাখি পাওয়া যায়।

Advertisement
আরও পড়ুন