Bardhaman

‘ডাকাত’দের সঙ্গে দেখা করতে বন্দুক নিয়ে আদালতে! বর্ধমানে যুবককে হাতেনাতে ধরল পুলিশ

তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, বর্ধমান আদালতে কয়লা কারবারি রাজু ঝা খুন-সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছে। দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে চলছে একটি ডাকাতির মামলা। সেই

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪ ২০:৪৭

—নিজস্ব চিত্র।

বিকেল ৪টে তখন। ঠাসা ভিড় আদালত চত্বরে। নিরাপত্তাও বেশ আঁটসাঁট। চারিদিকে ঘোরাঘুরি করছেন পুলিশকর্মীরা। কারণ কিছু ক্ষণ বাদেই চার ‘ডাকাত’কে হাজির করানো হবে আদালতে। তাঁদের দেখার জন্যই ভিড় জমেছে। এমন সময়েই তুমুল চিৎকার-চেঁচামেচি কিছুটা দূরে। আদালত চত্বর থেকে কয়েক জন বাইরে বেরিয়ে দেখলেন, পুলিশের সঙ্গে এক যুবকের জোর ধস্তাধস্তি হচ্ছে! যুবককে জাপ্টে ধরে কাবু করার চেষ্টা করছেন ওই পুলিশকর্মী। আর ওই যুবক নিজের প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে কিছু একটা বার করা চেষ্টা করছেন। শুরুতে অনেকেই মনে করেছিলেন, সিনেমা শুটিং হচ্ছে বোধহয়! কিন্তু মুহূর্তেই সেই ভুল ভাঙে। হঠাৎই পুলিশকর্মী চেঁচিয়ে জানান, যুবকের কাছে বন্দুক আছে। আর তক্ষুনি ভিড়ের মধ্যে থেকে সাদা পোশাকের কয়েক জন পুলিশকর্মী বেরিয়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুবকের উপর। কেউ হাত ধরলেন, কেউ ধরলেন পা। শেষে এক দুঁদে অফিসারের কব্জির জোরেই হাল ছাড়লেন যুবক!

Advertisement

শুক্রবার বর্ধমান আদালত চত্বরে এই ঘটনার আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, বর্ধমান আদালতে কয়লা কারবারি রাজু ঝা খুন-সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছে। দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে চলছে একটি ডাকাতির মামলা। সেই মামলায় ধৃতদের সঙ্গে দেখা করতেই গিয়েছিলেন ওই যুবক। আইনজীবীদের অনুমান, ওই যুবককের সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিলেন। গন্ডগোলের সময় তাঁরা পালিয়ে গিয়েছেন। এই ঘটনার পর বিষয়টি জেলা জজকে জানান আইনজীবীরা। বিষয়টি দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক অরবিন্দ মিশ্রের নজরেও আনেন সরকারি আইনজীবী উদয়শঙ্কর কোনার। এর পরেই আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে জিআরও-র সঙ্গে আলোচনা করেন বিচারক।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট একটি ডাকাতির মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলায় অভিযুক্ত চার জন— অজয় দাস, রীতেশকুমার রাম, সঞ্জিতকুমার বিন্দ ও রঞ্জিৎকুমার বিন্দের সঙ্গে আদালতের লকআপে দেখা করতে গিয়েছিলেন ওই যুবক। অন্য একটি মামলায় ওই চার জনের দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘এই ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আমরা আতঙ্কিত। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ আদালত চত্বরে নিরাপত্তা নিয়ে কড়া ভূমিকা নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement