Government Land Encroachment

আধিকারিককে হুমকি, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বৃহস্পতিবার ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন সুমন। যদিও তপন বলেন, “আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:৪৮
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দখল করে নেওয়া হচ্ছে খাসজমি। অভিযোগ পেয়ে অভিযানে গিয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের ‘হুমকি’র মুখে পড়তে হয়েছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিককে। সালানপুর ব্লকের আছড়া গ্রামের ঘটনায় রূপনারায়ণপুর ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তপন তিওয়ারি।

Advertisement

পঞ্চায়েতের কর্মতীর্থ বাজার লাগোয়া প্রায় ৩৫ শতক খাসজমি রয়েছে। ভূমি সংস্কার আধিকারিক সুমন সরকার জানান, অভিযোগ আসে, ওই জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে। সেই মতো প্রায় এক মাস আগে তিনি অন্য কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে জমি জরিপের কাজে যান। তাঁর দাবি, অভিযোগের সত্যতা দেখার পরে অভিযুক্তদের খোঁজ করে তাঁদের নোটিস পাঠিয়ে দখলদারি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এতে অভিযুক্তেরা থেমে যাননি। সুমন জানান, গত বুধবার ফের এলাকা পরিদর্শনে যান। তাঁর দাবি, দেখা যায়, জায়গাটি পাঁচিল তুলে ঘিরে নেওয়া হয়েছে। সুমনের অভিযোগ, “অভিযুক্তদের দ্রুত পাঁচিল ভেঙে দেওয়ার অনুরোধ করি। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ করা হবে। তখনই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তপন তিওয়ারি ও তাঁর ছেলে পল্লব দলবল নিয়ে এসে দখলকারীদের পক্ষ নেন। দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেন।” কথা না শুনলে মারধর ও অফিসের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তিনি জানান, তখন পুলিশকে ফোন করেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আধিকারিক-সহ অন্য কর্মীদের নিরাপদে বার করে নিয়ে যায়।

বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বৃহস্পতিবার ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন সুমন। যদিও তপন বলেন, “আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি। স্থানীয়েরা তাঁদের অসুবিধার কথা আমাকেই জানাবেন। যাঁদের বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা বুধবার আমাকে ফোন করেন। মীমাংসা করার জন্য এলাকায় গিয়েছিলাম। হুমকির অভিযোগ ঠিক নয়।” তপনের দাবি, জমি দখলের অভিযোগও ঠিক নয়। স্থানীয়েরা নিজেদের জমিতেই পাঁচিল তুলছেন। সে কথা বোঝাতে ওই দিন তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন।

এ দিকে, ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে খাসজমি দখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৈলাশপতি মণ্ডলের। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং খাসজমি দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে সেই কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “এমন বেনিয়ম নজরে এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিরোধীরাও। সিপিএমের সালানপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক আবির ঘোষ বলেন, “প্রথম অন্যায় হয়েছে সরকারি জমি দখল করা। দ্বিতীয় অন্যায় হয়েছে সরকারি আধিকারিককে হুমকি দেওয়া। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত।” বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “গত ১৩ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে লুট ও দখলের রাজত্ব কায়েম করেছে তৃণমূল। এদের সরাতে না পারলে এ সব বন্ধ হবে না।”

তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, ‘হুমকি’র ঘটনাকে মোটেই ভাল ভাবে নেননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধক্ষ তথা তৃণমূলের সালানপুর ব্লক সভাপতি মহম্মদ আরমান বলেন, “আমরা শুনেছি। ঠিক কী ঘটেছে, খোঁজ করছি।”

Advertisement
আরও পড়ুন