গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
স্ত্রী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। তাঁকে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন স্বামী। ট্রেন থেকে নামতেই ঝেঁপে বৃষ্টি। ছাতা নিয়ে দম্পতি বাড়ির পথে হাঁটছিলেন। হঠাৎ থমকালেন স্বামী। স্ত্রী দেখালেন, বৃষ্টিভেজা রাস্তায় লাফাচ্ছে একটা কই মাছ। স্বামী মাছটিকে ধরে ফেলেন। কিছু ক্ষণ পর আরও একটি কই নজরে পড়ে। সেটিকেও ধরেন। দু’হাতে দুটো কই নিতেই চোখে পড়ল তৃতীয় মাছটি। তখন হাতে থাকা একটি মাছকে দাঁতে চেপে ধরে তৃতীয়টিকে ধরতে হাত বাড়িয়েছিলেন যুবক। তখনই অঘটন। জ্যান্ত কই মাছটি গলায় গিয়ে আটকে যায় যুবকের। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের তেলেগ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম সাগর রায়। ৩৫ বছরের ওই যুবকের গলায় জ্যান্ত কই আটকে ছিল। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু চিকিৎসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
সাগরের বাড়ি হুগলির পান্ডুয়ার রামবোয়া গ্রামে। কর্মসূত্রে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন জৌগ্রামের তেলেগ্রামে। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, বর্ধমান শহরে ডাক্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন সাগর। ট্রেন থেকে জৌগ্রাম স্টেশনে যখন তাঁরা নামেন, তখন রাত ৮টা। স্টেশন থেকে বাড়ি ফিরছিলেন হেঁটেই। মৃতের আত্মীয় ধলা রায় বলেন, ‘‘বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় কই মাছ উঠে এসেছিল। সাগর প্রথমে দু’হাতে দু’টি কই মাছ ধরেছিল। পরে রাস্তায় আর একটি কই দেখতে পেলে হাতে থাকা একটি মাছকে মুখে রেখে রাস্তা থেকে ওই মাছটি ধরতে যায়। অসাবধানতাবশত মুখে থাকা মাছটি গলায় চলে যায়। তড়িঘড়ি ওকে জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো যায়নি।’’ তিনি জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান সাগর। এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ এলাকা। শুক্রবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে সাগরের দেহ।