—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলকে ‘ফাঁসাতে’ দলীয় কর্মীকে দিয়ে নিজের বাড়িতে বোমাবাজি করিয়েছেন সিপিএম প্রার্থী। এই অভিযোগে কলকাতা থেকে গ্রেফতার হলেন পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা পূর্ব বর্ধমানের এক সিপিএম প্রার্থী। আগেই বোমাবাজি করার অভিযোগে অভিযুক্ত দলীয় কর্মীকে পাকড়াও করে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে এ বার অভিযুক্ত সিপিএম প্রার্থী সুশান্ত মণ্ডলকেও গ্রেফতার করল পুলিশ।
জামালপুর থানার উত্তর মোহনপুরে সুশান্তের আদি বাড়ি। বর্তমানে কলকাতার ঘোলা থানার বিবেকানন্দ পার্ক এলাকায় থাকেন তিনি। সেখান থেকেই তাকে মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অভিযুক্ত নিজের দোষ স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। একটি গাড়ি করে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়া থেকে বোমা আনার কথা তিনি তদন্তকারীদের কাছে কবুল করেছেন। ওই গাড়িটি ইতিমধ্যেই পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। ধৃতকে মঙ্গলবারই বর্ধমান সিজেএম আদালত তোলা হয়। ওই বোমার সরবরাহকারীদের পরিচয় জানতে ধৃতকে ১০ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। ধৃতকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিস সূত্রে খবর, জামালপুরের ১৩৯ নম্বর বুথ থেকে প্রার্থী হন সুশান্তের স্ত্রী দেবিকা দেবনাথ। ১৪১ নম্বর বুথে প্রার্থী হন সুশান্ত নিজে। দু’জনেই লড়েছিলেন সিপিএমের টিকিটে। গত ২৫ জুন ভোরে সুশান্তর বাড়ির সামনে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। একটি বোমা ফাটে তাঁর বাড়িতে। দু’টি তাজা বোমা বাড়ির সামনে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বম্ব ডিস্পোজাল স্কোয়াড সেগুলি উদ্ধার করে। এই ঘটনার সিপিএমের জামালপুর-১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুকুমার মিত্র পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমাবাজিতে জড়িত। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। বোমাবাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তর মোহনপুরের বাসিন্দা রাম সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে দু’টি তাজা বোমা এবং একটি পিস্তল উদ্ধার হয় বলে দাবি পুলিশের। সোমবার ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেন তদন্তকারীরা। হেফাজতে থাকা ওই সিপিএম কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বোমাবাজির ঘটনায় সিপিএম প্রার্থী সুশান্তের জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ।
এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। মঙ্গলবার সিপিএমের জামালপুর-১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুকুমার মিত্র বলেন, ‘‘যদি কেউ অন্যায় করে থাকেন, দল তাঁকে সমর্থন করবে না। আগেও করেনি। এখনও করবে না।’’ অন্য দিকে, জামালপুরের তৃণমূল বিধায়ক অলোক মাঝি বলেন, ‘‘এর থেকেই প্রমাণিত হল অশান্তি পাকানোর জন্য রাম-বাম, সব এক জায়গায় হয়েছে। তবে প্রশাসনের ভূমিকা খুব ভাল।’’ একই কথা বলেন জামালপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেহমুদ খান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সিপিএম তৃণমূলকে হেয় করতে পরিকল্পনা করে বোমবাজি করেছে এলাকায়। মানুষ নির্বাচনে তার যোগ্য জবাব দিয়েছে।’’