Halisahar Municipality

ব্যবসায়ীর হাতে ৮০ লাখ থাকতেই পারে, মন্তব্য হালিশহরের পুরপ্রধানের আইনজীবীর

সিবিআইয়ের দাবি, রাজুর মেসার্স গ্লোবাল ট্রাস্ট কোম্পানি লিমিটেড নামক সংস্থায় চিটফান্ডের টাকা যেত। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে ওই চিটফান্ড সংস্থা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:৪৯
রাজুর পাঁচ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।

রাজুর পাঁচ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। ফাইল চিত্র।

সানমার্গ চিটফান্ড মামলায় ধৃত হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানির জামিন নাকচ করল আসানসোল জেলা আদালত। শনিবার দুপুরে রাজুকে আসানসোলের জেলা আদালতের সিজিএম তরুণ কান্তি মণ্ডলের এজলাসে পেশ করা হয়। তদন্তের স্বার্থে তৃণমূল নেতাকে সাত দিনের হেফাজতে নিতে আদালতের কাছে আবেদন করে সিবিআই। তবে দু’পক্ষের আইনজীবী সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক তাঁর জামিন নাকচ করে পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর রাজুকে আবার আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন বিচারক। রাজুর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০, ১২০বি, ৪৬৮, ৪০৬ এবং ৪০৯ নম্বর ধারায় মামলা করেছে সিবিআই। তাদের দাবি, রাজুর কাছ থেকে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা, একটি দেশি পিস্তল, চারটি ডেবিট কার্ড পাওয়া গিয়েছে। রাজুর কাছ থেকেও গ্রেফতারের সময় নগদ ৪০ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছে। যদিও রাজুর আইনজীবীদের দাবি ভিন্ন।

Advertisement

রাজুর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন দুই আইনজীবী প্রদীপ কর এবং প্রসেনজিৎ নাগ। তাঁদের দাবি, সিবিআই কোনও ‘সিজার লিস্ট’ আদালতে জমা দেয়নি। তাঁর এক আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল ব্যবসায়ী পরিবারের। তাঁদের একান্নবর্তী পরিবারে প্রায় সবাই সম্পন্ন ব্যবসায়ী। রাজু নিজেও তাই। সেই বাড়ি থেকে ৮০ লক্ষ টাকা (সিবিআইয়ের দাবি) পাওয়া কোনও বড় ব্যাপার নয়।

অন্য দিকে, সিবিআইয়ের হয়ে এই মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী শিবেন্দ্র সাচান এবং আইনজীবী রাকেশ কুমার। তাঁরা জানান, এই মামলায় দুটি চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। প্রথম চার্জশিটে ৮০ লক্ষ টাকা এবং একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে।

শুক্রবার রাজুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর দ্বিতীয় চার্জশিট তৈরি হয়েছে। তাতে রয়েছে চারটে চাবির রিং, চারটে মোবাইল, চারটে ব্যাঙ্কের কার্ড, নগদ ৪০,৩৬০ টাকা উদ্ধারের কথা।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, চিটফান্ড কোম্পানির চেয়ারম্যান সৌম্যদীপ ভৌমিকের সঙ্গে ২০১২ সালে সাক্ষাৎ হয় রাজু সাহানির। ওই সময় ওই কোম্পানির লোকসান চলছিল। বিদেশ থেকে বিনিয়োগকারী আনার জন্য রাজু এবং সৌম্যদীপের একটি চুক্তি হয়। পাঁচ-ছ’ বছর এই সংস্থা চলে। ২০১৮ সালে বর্ধমান সানমার্গ সংস্থার প্রায় আড়াই কোটি টাকার একটি সম্পত্তি কেবলমাত্র ৭৫ লক্ষ টাকায় কিনে নেন রাজু। সিবিআইয়ের এ-ও দাবি, রাজুর মেসার্স গ্লোবাল ট্রাস্ট কোম্পানি লিমিটেড নামক সংস্থায় চিটফান্ডের টাকা যেত। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে ওই চিটফান্ড সংস্থা।

প্রসঙ্গত, ওই সংস্থার প্রেসিডেন্ট চন্দ্রশেখর প্রায় ১৫ মাস সংশোধনাগারের ছিলেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁর জামিন হয়। এই ঘটনায় অন্য অভিযুক্ত বর্ধমান পুরসভার তৎকালীন পূর্বপ্রধান প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের জামিন হয়েছে। ২০১৪ সালে এই চিটফান্ড মামলায় মোট চারটি এফআইআর হয় কুলটি থানায়। ২০১৮ সালে এই মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই তদন্ত শুরু করে।

আরও পড়ুন
Advertisement