University of Burdwan

বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা উধাও নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা

গত শুক্রবার দুর্গাপুর থেকে পিনাকীকে সিআইডি গ্রেফতার করে। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় হানা দিয়ে একটি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করে সিআইডি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই স্থায়ী আমানতের টাকা ‘উধাও’ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার পিনাকী বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। পাঁচ দিন হেফাজতে থাকার পরে তাঁকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হলে জামিন দেন বিচারক। তবে এই মামলার মূল অভিযুক্ত, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতরের কর্মী ভক্ত মণ্ডল এখনও বেপাত্তা।

Advertisement

গত শুক্রবার দুর্গাপুর থেকে পিনাকীকে সিআইডি গ্রেফতার করে। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় হানা দিয়ে একটি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করে সিআইডি। খণ্ডঘোষের তোড়কনায় এই মামলার মূল অভিযুক্তের এক আত্মীয়ের বাড়িতেও হানা দেওয়া হয়। সিআইডির দাবি, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানত প্রকল্পে জমা রাখা ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন জমা পড়ে। সেই আবেদনে থাকা সই ব্যাঙ্কের নথিতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকের সইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। তিনি সম্মতি দেওয়ার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ঠিকাদার সুব্রত দাসের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, সেই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার কথা ছিল। সই না মেলা সত্বেও কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা সেখানকার অ্যাকাউন্টে জমা না পড়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা পড়ল তা ভেবে পাচ্ছেন না গোয়েন্দারা।

সিআইডির প্রশ্ন, অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠে যাওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সাত মাস পরে কেন ব্যাঙ্ক জানাল? তাহলে কী ব্যাঙ্ক ইচ্ছাকৃত ভাবেই দেরি করে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়েছে? ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্য নিয়েও তদন্তকারীদের সন্দেহ রয়েছে। সেই কারণে এই লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সমস্ত কর্মী থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে। যদিও ধৃতের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সম্মতি মেলার পরেই টাকা লেনদেনের অনুমতি দিয়েছেন।

এ দিকে, এই মামলার মূল অভিযুক্ত ভক্ত এখনও ধরা না পড়ায় তদন্তকারীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একটি জামিনের আবেদনের শুনানিতে জেলা জজ সুজয় সেনগুপ্ত এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে যে সব প্রশ্ন তুলেছেন তার কোনওটারই উত্তর মেলেনি। জেলা জজ তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, কী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেফাজতে থাকা স্থায়ী আমানত প্রকল্পের শংসাপত্র ব্যাঙ্ক পর্যন্ত পৌঁছল তা স্পষ্ট নয়। দেরিতে অভিযোগ দায়ের করা নিয়েও তিনি মন্তব্য করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেও জানান। যদিও আদালতে পেশ করা সিআইডির রিপোর্টে ওই সব কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত আদালতে জমা পড়েনি বলে জানা গিয়েছে। সিআইডি জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অনেকগুলি বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement