University of Burdwan

‘গায়েব’ টাকা ফেরত পেতে প্রশ্ন উদ্যোগে

মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানত ভেঙে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। সিআইডি এই মামলার তদন্তভার নেয়।

Advertisement
সৌমেন দত্ত
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৯
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

দু’টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছিল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বর্ধমান শহরের দু’টি শাখা থেকে। দু’টি ক্ষেত্রেই জালিয়াতির মামলা চলছে। দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বর্ধমান পুরসভা ওই ব্যাঙ্ক থেকে গায়েব হয়ে যাওয়া টাকার একটি অংশ ফেরত পেয়েছে। কিন্তু স্থায়ী আমানত ভেঙে খোয়া যাওয়া টাকার কোনও অংশই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এখনও ফেরত পায়নি। টাকা ফেরত পাওয়ার তাগিদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নতুন উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পরে উদ্যোগে গতি আসে কি না, দেখার অপেক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত নানা পক্ষ।

Advertisement

গত মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানত ভেঙে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। সিআইডি এই মামলার তদন্তভার নেয়। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মী-সহ উধাও হওয়া টাকা যাঁদের অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল বলে অভিযোগ, তাঁদের কয়েক জনকে সিআইডি গ্রেফতার করে। সেই সময়ে ব্যাঙ্কের ওই শাখার যিনি ম্যানেজার ছিলেন, পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। তিনি জামিন পেয়েছেন। সম্প্রতি খণ্ডঘোষ ও বর্ধমানের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
আদালতে সিআইডি দাবি করে, ওই দু’জনের অ্যাকাউন্টেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গায়েব হওয়া টাকার বড় অংশ জমা পড়েছিল। তবে এখনও পর্যন্ত এই প্রতারণার মূল অভিযুক্ত, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতরের কর্মী ভক্ত মণ্ডলের নাগাল পাননি তদন্তকারীরা।

অন্য দিকে, গত সেপ্টেম্বরে বর্ধমান পুরসভা জানতে পারে, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জিটি রোডের শাখা থেকে দু’টি চেকে ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকেরা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ অগস্ট প্রথম টাকা তোলা হয়। সে বার ৪৮ লক্ষ ২১ হাজার টাকা তোলা হয়েছিল। দ্বিতীয় বার টাকা তোলা হয় ৪ সেপ্টেম্বর। সে বার পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া যায় প্রায় ৯৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। দু’টি চেকেই ‘অপারেটর’দের সই ছিল না। ব্যাঙ্কের গাফিলতিতে প্রতারণা হয়েছে বলে পুরসভা দাবি করে। ব্যাঙ্ক তা মেনে প্রথম বার খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত দিয়েছে। তবে, ওই ব্যাঙ্কের নাগপুরের একটি শাখা পুলিশের কাছে পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল। দাবি করা হয়, সাইবার-চক্রে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা উধাওযের ঘটনায় পুর-কর্মীরাও জড়িত।

তবে পুরসভার টাকা গায়েব হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কিছু টাকা পুরসভাকে ফিরিয়েছে এবং বাকি টাকাও ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছে। অথচ, একাধিক জন সিআইডি-র হাতে ধরা পড়ার পরেও ওই একই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের গায়েব হওয়া টাকা ফেরাতে নারাজ। উল্টে তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতিতেই টাকা দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র সংগঠন, কর্মী সংগঠন এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের অনেকেরই প্রশ্ন, এই টাকা ফেরতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সাহায্য নিচ্ছে না কেন?

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, “ব্যাঙ্কের ভুলেই টাকা
উঠেছে। আইনি সেল বিষয়টি দেখছে। দ্রুত টাকা চেয়ে মামলা করা হবে।
তার আগে সব পক্ষকেই নোটিস দেওয়া হচ্ছে।”

Advertisement
আরও পড়ুন