Rabi Hansda

ভারতের জার্সিতে নিজেকে মাঠে দেখতে চাই: রবি

আদিবাসী নৃত্যের তালে তালে, রজনীগন্ধা-গাঁদার মালা পরিয়ে, রাস্তার ফুল ছড়িয়ে রবিকে বরণ করে নিলেন মুশারু আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দারা।

Advertisement
সুদিন মণ্ডল
শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৪
গ্রামে ফিরলেন রবি।

গ্রামে ফিরলেন রবি। নিজস্ব চিত্র।

তাঁর গোলেই সন্তোষ ট্রফি জিতেছে বাংলা। গোটা প্রতিযোগিতায় ১২টি গোল করেছেন মঙ্গলকোটের মুশারু গ্রামের রবি হাঁসদা। কলকাতায় ফিরেই একের পর এক সংবর্ধনায় ভেসেছেন ট্রফি জয়ী দলের সদস্যেরা। রবিবার দুপুরে গ্রামে ফিরতেই ধামসা মাদল বাজিয়ে, আদিবাসী নৃত্যের তালে তালে, রজনীগন্ধা-গাঁদার মালা পরিয়ে, রাস্তার ফুল ছড়িয়ে রবিকে বরণ করে নিলেন মুশারু আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দারা।

Advertisement

তাম্বর মুর্মু, সুকল হেমব্রম ,গণেশ মার্ডি ,সুরেশ হেমব্রমরা বলেন, ‘‘রবি আমাদের এলাকার নাম বিখ্যাত করেছে। গোটা দেশ আজ ওকে ওর খেলার মাধ্যমে চিনেছে। সোনার ছেলেকে আমরা আমাদের মতো করে বরণ করেছি।’’ ধামসা মাদল বাজিয়ে গোটা পাড়া ঘোরানো হয় রবিকে। গ্রামের ঠাকুরতলায় ছেলেকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন মা তুলসী হাঁসদা।

বাড়িতে ঢোকার আগে কাঁসার থালায় ছেলের পা ধুইয়ে দেন তুলসী। তার পরে মিষ্টিমুখ করান। ঘরভর্তি স্মারকের সামনে দাঁড়িয়ে রবি বলেন, ‘‘সন্তোষ ট্রফি জিততে গোটা দল ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করেছে। একের পর এক দলকে পরাজিত করেছি। সেমিফাইনালে গত বারের চ্যাম্পিয়ন সার্ভিসেসকে চার গোল দিয়েছি। বিশ্বাস ছিল ফাইনালটা জিতবই। তাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই জারি রেখেছিলাম। আমি খুশি যে আমার গোলেই দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এখন কোনও বড় দলে সুযোগ পেলে যোগ্যতার আরও প্রমাণ দিতে চাই। ভারতের জার্সি পরে নিজেকে মাঠে দেখতে চাই।’’

সরকারি চাকরি প্রসঙ্গে রবি বলেন, ‘‘ফর্ম পূরণ করেছি। এক মাসের মধ্যে পুলিশে চাকরি হবে বলে জানানো হয়েছে।’’ তরুণ প্রজন্মের প্রতি রবির বার্তা, ফুটবলটা মন দিয়ে খেলতে হবে। দিনে অন্তত দু'ঘণ্টা অনুশীলন করতে হবে। এলাকায় একটি কোচিং সেন্টার তৈরি করতে চান তিনি। তুলসী বলেন, ‘‘চাকরি পেলে খেলায় আরও মনোযোগ দিতে পারবে ছেলে।’’ রবির স্ত্রী ভারতী হাঁসদা জানান, তাঁদের বছর দেড়েকের কন্যা রিমিও বাবার মতো ফুটবলার হতে চায়।

দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এ দিন রবির বাড়ি গিয়ে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও উপহার দেন মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূলের সভাপতি রামকেশব ভট্টাচার্য। পরে কৈচর দলীয় কার্যালয়ে রবিকে সংবর্ধনা দেন মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘রবি যে দিন চাইবে, ফুটবলের কোচিং সেন্টারের জন্য সে দিনই তাঁকে পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে।’’ রবির ছোটবেলার কোচ মুদরাজ সেডেনের কথায়, ‘‘গ্রাম বাংলার উঠতি খেলোয়াড়দের কাছে আদর্শ হয়ে উঠেছে রবি।’’ কলকাতার কয়েকটি বড় ক্লাব রবিকে নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছে বলে তাঁর দাবি।

বিকেলে ভাতারের এরুয়ারে মাঠে রবিকে সংবর্ধনা দেন ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘এই মাঠেও রবি বেশ কিছুদিন অনুশীলন করেছেন। ফুটবলের উন্নতিতে রবি ভাতারে কিছু করতে চাইলে ওঁর পাশে থাকব।’’ ভাতারের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রবিকে পাঁচ বছরের জন্য নিজেদের ‘ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর’ করার কথা ঘোষণা করে।

Advertisement
আরও পড়ুন