মারামারির সেই দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ে আর কয়েক দিন পরেই। হবু স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন যুবক। রাস্তার পাশে নিরিবিলি একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন যুগলে। অতর্কিত সেখানে উপস্থিত হন জনা কয়েক যুবক। শুরু হয় নীতিপুলিশি। সেই ঘটনার রেশ নিয়ে পরের দিন তর্কাতর্কি থেকে হাতাহাতি, বাঁশ হাতে মারপিট থেকে মোটরবাইক ফেলে দিয়ে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব বর্ধমানে ভাতারের একটি গ্রাম। এই ঘটনায় পুলিশ মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি আহত হবু বর এখন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর নাম রাজীব মণ্ডল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভাতারের এরুয়ার গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে বলগোনা বাজারের পাশে একটি গ্রামের তরুণীর বিয়ে ঠিক হয়েছে। দুই পরিবার বিয়ের আয়োজন শুরু করেছে। বুধবার বিকেলে ওই যুবক হবু স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন বলগোনা বাজারের অদূরে শিকোত্তর গ্রামের কাছে মাঠের ধারে একটি নিরিবিলি জায়গায়। সেখানে গল্প করছিলেন দু’জন। অভিযোগ,ওই সময় শিকোত্তর গ্রামের বাসিন্দা কয়েক জন যুবক তাঁদের কাছে গিয়ে বলেন, ‘‘এই এলাকায় এসে এ ভাবে গল্পগুজব করা যাবে না।’’ এ নিয়ে একপ্রস্ত কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই যুগল বলগোনার দিকে চলেও যান।
জানা গিয়েছে, ওই ঘটনার জেরে এরুয়ার গ্রামের কয়েক জন যুবক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলগোনা বাজারে গিয়ে শিকোত্তর গ্রামের ওই যুবকদের খুঁজতে থাকেন। একটি চায়ের দোকানের কাছে পেয়েও যান তাঁদের। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
গন্ডগোলের খবর পেয়ে ভাতার থানার পুলিশ কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে যায়। প্রথমে দুই পক্ষের কয়েক জনকে আটক করা হয়। তার পর দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি চলার সময় শিকোত্তর গ্রামের এক যুবককে দেখা যায় মোটা লম্বা বাঁশ উঁচিয়ে এরুয়ার গ্রামের ওই যুবককে সজোরে আঘাত করতে। সেই দৃশ্য কয়েক জন মোবাইলের ক্যামেরাবন্দি করেন। সমাজমাধ্যমে ওই মারামারির কয়েকটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। বাঁশের আঘাতে জখম যুবক এরুয়ার গ্রামের বাসিন্দা রাজীব।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে পাঁচ জন শিকোত্তর গ্রামের বাসিন্দা। বাকি ছ’জনের মধ্যে চার জনের বাড়ি এরুয়ার গ্রামে। এক জন মুরাতিপুর এবং এক জন মান্দারডিহিতে থাকেন। ধৃতদের শুক্রবার বর্ধমান আদালতে হাজির করানো হয়েছে।