(বাঁঁ দিক থেকে) সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল, নীলাদ্রি দাস এবং অয়ন শীল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পেলেন অয়ন শীল। এর আগে ইডির মামলাতেও তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনই অয়নের জেলমুক্তি হচ্ছে না। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার জন্য এখনও জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। ওই মামলায় ইডি এবং সিবিআই— উভয়ের হাতেই অয়ন গ্রেফতার হয়েছেন। এখনও তদন্ত চলছে।
এই নিয়ে প্রাথমিক মামলায় পঞ্চম জামিন হল। এর আগে নীলাদ্রি দাস, তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ এই মামলায় জামিন পেয়েছেন। অন্যতম অভিযুক্ত ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্ত। এ বার জামিন পেলেন অয়ন। শুক্রবার তাঁর মামলাটি ওঠে কলকাতার বিচারভবনে। এক লক্ষ টাকার বন্ড এবং কয়েকটি শর্তের সাপেক্ষে অয়নের জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন তৃণমূলের যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়নকে প্রাথমিক মামলায় গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরে একই মামলায় তাঁকে সিবিআইও গ্রেফতার করে। অভিযোগ, অয়ন আট এজেন্টের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ১ কোটি ৬৭ লক্ষ কোটি টাকা তুলেছিলেন। সেই টাকা গিয়েছিল অন্যতম অভিযুক্ত সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে। অয়ন ইমেল করে প্রার্থিতালিকা সন্তুকে পাঠিয়েছিলেন। সন্তু সেই তালিকা কুন্তলকে দেন।
প্রাথমিকের তদন্তের সূত্রেই পুর নিয়োগ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসে। অয়নের বাড়িতে তল্লাশির পর এই সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে পুর নিয়োগ মামলাতে পৃথক ভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, পুরসভায় চাকরির নাম করে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন অয়ন। সিবিআইয়ের দাবি, অয়নের সংস্থার মাধ্যমে মোট ১৭টি পুরসভায় দুর্নীতি হয়েছে। মোট ১,৮২৯ জনকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে।
পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে একটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপেরও সন্ধান পায় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির একটি সূত্র দাবি করে, ওই গ্রুপের মাধ্যমেই চলত দুর্নীতির কারবার। অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নাম এই গ্রুপে জমা পড়ার পর, তাঁদের চাকরি সুনিশ্চিত করতেন পুর কর্তৃপক্ষ। অয়নের বাড়ি ও অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া নথিতে অনেক সাঙ্কেতিক শব্দ থেকে একাধিক মন্ত্রী যুক্ত থাকতে পারেন বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তদন্তকারীরা।