Sikkim Flood

সিকিমের পাহাড়ি পথের ভাঙনে মন ভাঙছে পর্যটকদের

মূলত মহালয়ার পর থেকেই দলে দলে মানুষ বেরিয়ে পড়েন ঘুরতে। প্রতি বছর এ শহরের পর্যটকদের বড় অংশের গন্তব্য থাকে সিকিম।

Advertisement
চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৫৮
An image of Sikkim Flood

ভয়াবহ বিপর্যয় সিকিমে। —ফাইল চিত্র।

দুর্গাপুজোর বাকি আর সপ্তাহ দুয়েক। ঠিক তার আগে সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনায় উদ্বেগের মেঘ ঘনাচ্ছে ভ্রমণপিপাসু বাঙালির মনে। পুজোর ছুটিতে সিকিম বেড়ানোর পরিকল্পনা করে রাখা পর্যটকদের বড় অংশ তাই খোঁজখবর শুরু করেছেন এ নিয়ে। বুধবার সকাল থেকেই ভ্রমণ সংস্থাগুলির ফোন ব্যস্ত। কারও প্রশ্ন, আদৌ যাওয়া যাবে কি? কেউ আবার বিকল্প ব্যবস্থার বন্দোবস্ত শুরু করেছেন। যদিও পুজোর আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা জোগাচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সিকিমের ভয়াবহ পরিস্থিতির খবর এ দিন সকাল থেকেই দ্রুত বেগে ছড়িয়ে পড়ে। তিস্তার জলস্তর ১৫-২০ ফুট বেড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই পাহাড়ি সড়কের একাধিক জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমের যোগাযোগের রাস্তা ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বড় অংশ ভেঙে ঝুলছে। ফলে, দুই রাজ্য আপাতত বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। ঘুরপথে নামানো হচ্ছে আটকে পড়া পর্যটকদের। ভাঙনের ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর সিকিমের বড় অংশ। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, প্রশাসনের তরফে সে বিষয়ে এখনই কিছু জানানো সম্ভব হয়নি।

মূলত মহালয়ার পর থেকেই দলে দলে মানুষ বেরিয়ে পড়েন ঘুরতে। প্রতি বছর এ শহরের পর্যটকদের বড় অংশের গন্তব্য থাকে সিকিম। কেউ ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে, কেউ বা নিজেই পরিকল্পনা করে ঘুরে আসেন ওই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে। পুজোর পক্ষকাল আগে পাহাড়ে বিপর্যয়ের খবর তাই নাড়িয়ে দিয়েছে শহরের ভ্রমণ সংস্থাগুলিকেও।

তেমনই একটি ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার অসিত বিশ্বাস বললেন, ‘‘উদ্বেগ যে একটা আছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। অনেকেই নতুন করে খোঁজ নিচ্ছেন। তবে হাতে এখনও বেশ কিছু দিন সময় আছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা আছে।’’ একই দাবি বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের এক ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার দীপঙ্কর দাসের। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই ফোন করছেন। অফিসে এসেও বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলছেন। কিন্তু এখন চাইলেই অন্য জায়গায় ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। সকলকে আরও কয়েক দিন দেখতে বলছি।’’ আর এক পর্যটন ব্যবসায়ী সমর ঘোষের মতে, ‘‘ভ্রমণ ব্যবসায় যুক্ত বহু মানুষ প্রতি বছর উৎসবের এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। পর্যটকেরাও বেড়ানোর জন্য মুখিয়ে থাকেন। সিকিমে যাওয়া না গেলে পর্যটন ব্যবসায় বিরাট ক্ষতি হবে। আমরা সিকিমের ভ্রমণ সংস্থাগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। নতুন করে বিপর্যয় না ঘটলে আশা করছি পুজোয় অসুবিধা হবে না।’’

সকালে সিকিমের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর শুনেই শিয়ালদহের এক ভ্রমণ সংস্থার অফিসে পৌঁছে গিয়েছিলেন বাঘা যতীনের স্বপ্না পাত্র। বিকল্প কিছু ব্যবস্থা আছে কি না, খোঁজ নিচ্ছিলেন। স্বপ্না বলেন, ‘‘সারা বছরের ছুটি এ দিক-ও দিক করে পুজোর সময়ে বেড়াতে যাই। এ বছর উত্তর সিকিমে যাব ঠিক করেছিলাম। সব আয়োজন সারা। কিন্তু যা পরিস্থিতি, আদৌ যাওয়া হবে কি না, সেটাই বুঝতে পারছি না।’’

পর্যটকদের মনে সিকিম নিয়ে আতঙ্ক বাড়লেও রেলের সংরক্ষিত টিকিট বাতিলের পথে এখনও হাঁটেননি তাঁরা। অন্তত এমনটাই জানাচ্ছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর ছুটিতে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা এখনও একই রকম আছে। সংরক্ষিত টিকিট বাতিল করার প্রবণতা মানুষের মধ্যে দেখা যায়নি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement