মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের পরে জঙ্গলমহলের জেলাগুলির জলসেচের ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার। প্রতি বছর গ্রীষ্মকালের মাসগুলোতে তীব্র জলকষ্টে ভোগে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলা। সম্প্রতি জঙ্গলমহল সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জেলাগুলিতে পানীয় ও সেচের জলের জোগান বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশ পাওয়ার পরেই জেলার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে সেখানকার জলের সমস্যা মেটানোর বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে একটি বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে জলসেচের জোগান সুনিশ্চিত করতে ঝাড়গ্রামে নতুন ৫০ টি চেক ড্যাম তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শুধু চলতি বছরের জন্য নয়, যে ৫০ টি চেক ড্যাম তৈরির কথা মন্ত্রী আমাদের বলেছেন সেগুলো স্থায়ীভাবেই করা হবে। যাতে আগামী বছর থেকে গরমকালে পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলায় সেচের জলের কোনও অভাব না থাকে। চেক ড্যাম নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক জেলাকে প্রয়োজন ও চাহিদার বিষয়টি মাথায় রাখতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে দফতরের মন্ত্রী মানস বলেন, "সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলের জেলা শহরে গিয়ে বুঝতে পারেন রাজ্যের এই অংশে জলসেচের বিষয়টিকে বেশি করে গুরুত্ব দিতে হবে। তাঁর এই নির্দেশকে মাথায় রেখে জলসম্পদ ও অনুসন্ধান দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন চেক ড্যাম তৈরি হবে। যাতে ওই অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষের চাষের জন্য কোনও অসুবিধা না হয়।" পাশাপাশি, পুরুলিয়া জেলার জন্য বিশেষ ভাবনা রয়েছে দফতরের। এই কর্মসূচিতে নতুন একটি অনুসন্ধান পর্ব রাখা হয়েছে। পুরুলিয়া জেলায় মাটির নিচে জল কতদূর পর্যন্ত রয়েছে, সেই জল উত্তোলন করে পানীয় ও সেচের কাজে লাগানো যায় কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এই কাজে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ইঞ্জিনিয়ারের সাহায্য নেওয়া হবে। তিনিও নিজ প্রচেষ্টায় পুরুলিয়ায় মাটির নিচে থাকা জলের অনুসন্ধান করছেন।
প্রসঙ্গত, রাজনীতির কারবারীদের মতে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছিল শাসক দল। তাই এবার আগে থাকতেই জঙ্গলমহলের জেলাগুলির সমস্যা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই তালিকায় গ্রীষ্মে জলসেচের সরবরাহ ঠিক রাখতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যার ফলস্বরূপ ৫০টি নতুন চেক ড্যাম তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর।