West Bengal Tab Money Scam

ট্যাব-কাণ্ড থেকে ‘শিক্ষা’! বাংলার শিক্ষা পোর্টালে লগ ইনে ওটিপি বাধ্যতামূলক করল বিকাশ ভবন

সমস্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছে ইতিমধ্যেই এই নির্দেশের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে। নয়া ব্যবস্থা চালু করার জন্য চলতি মাসের ১০, ২০ এবং ২৫ তারিখে সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাঠাতে হবে প্রধানশিক্ষকদের।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১১:২২

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

ট্যাব-কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলার শিক্ষা পোর্টালের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করল রাজ্য। চলতি মাসের শুরুতেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, এখন থেকে শুধুমাত্র আইডি-পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করা যাবে না। প্রয়োজন পড়বে ওটিপি-ও।

Advertisement

গত ৪ এপ্রিল জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে যে কেউ চাইলেই বাংলার শিক্ষা পোর্টালে ইচ্ছামতো লগ ইন করতে পারবেন না। দিতে হবে ওটিপি। তার পরেই ‘তরুণের স্বপ্ন’ থেকে ‘কন্যাশ্রী’— যে কোন‌ও সরকারি প্রকল্পের পোর্টালে ঢুকতে পারবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, লগ ইন করার সময় সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি ঢুকবে। এই ওটিপি আসবে প্রধানশিক্ষকদের কাছে। ফলে এখন থেকে কোনও সরকারি প্রকল্পের টাকায় তছরুপ কিংবা দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দায় এড়াতে পারবেন না প্রধানশিক্ষকেরা।

সমস্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে ইতিমধ্যেই এই নির্দেশের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে। নয়া ব্যবস্থা চালু করার জন্য চলতি মাসের ১০, ২০ এবং ২৫ তারিখে সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাঠাতে হবে প্রধানশিক্ষকদের। তথ্য হিসেবে পাঠাতে হবে প্রধানশিক্ষকের নাম, ফোন নম্বর এবং আধার নম্বর। তার পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অর্থাৎ এআই প্রযুক্তির সাহায্যে এই নাম নথিভুক্তকরণ এবং পাসওয়ার্ড তৈরির কাজ করা হবে। সব শেষে জেলা স্কুল পরিদর্শক অনুমতি দিলে চালু হয়ে যাবে লগ ইনের নতুন পদ্ধতি।

যদিও এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শিক্ষকদের। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘ট্যাব-কাণ্ড নিয়ে দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে সেই দুর্নীতিতে সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে রয়েছে কি না, তারও যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল আবার বলছেন, ‘‘ট্যাব কেলেঙ্কারির পর ভুল থেকে হয়তো শিক্ষা নিতে চাইছে রাজ্য। এর আগে নিজেদের ভুল ঢাকার জন্য প্রধানশিক্ষকদের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আদতে পোর্টালেই যে ত্রুটি ছিল, তা এখন ঘুরিয়ে স্বীকার করা হল! আশা করব এ বার জালিয়াতি কমবে। তবে আমরা ট্যাব কেনার টাকা দেওয়ার বিরুদ্ধে।’’

প্রসঙ্গত, রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনার সুবিধার্থে ট্যাব কেনার জন্য ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প চালু করেছিল সরকার। এই প্রকল্পের অধীনে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে পান পড়ুয়ারা। আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সেই টাকা চলে যায়। স্কুলের মাধ্যমেই করা হয় আবেদন। অভিযোগ, গত বছর রাজ্যের অনেক পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। বরং তা চলে গিয়েছে অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে এটিএম থেকে সেই টাকা তুলেও নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই তদন্তে নেমে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক থেকে কৃষক— সকলেই রয়েছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন