Ram Mandir

মোদীর বারণ! আপাতত রামমন্দির দর্শনে যাওয়া হচ্ছে না শুভেন্দু-সহ বাংলার বিজেপি বিধায়কদের

২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধনের পর বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করেছিলেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দলের নেতা-কর্মীরা পালা করে রামমন্দির দর্শন করতে যাবেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৪
After Prime minister Narendra Modi’s instruction Bengal BJP MLAs will not got to ayodhya to visit the Ram Mandir

রামমন্দির দর্শনে যাওয়া হচ্ছে না বাংলার বিজেপি বিধায়কদের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বারণ! অথবা নির্দেশ মেনে অযোধ্যায় রামমন্দির দেখতে আপাতত যাওয়া হচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়কদের। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁদের অযোধ্যায় যাওয়ার কর্মসূচি তৈরি হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, ওই দিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্যেরা রামলালার দর্শন করতে যাবেন অযোধ্যায়। সেই মর্মে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল বিধায়কদের মধ্যে। কিন্তু সেই কর্মসূচি এখন আর হচ্ছে না বলেই বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে খবর।

Advertisement

গত ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধনের পর বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করেছিলেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দলের নেতা-কর্মীরা পালা করে রামমন্দির দর্শন করতে যাবেন। যা লোকসভা নির্বাচনে তাঁদের ভোটারদের জন্য ‘ভোকাল টনিক’ প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে। কিন্তু মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই দেখা যাচ্ছে অযোধ্যায় প্রতিদিন ব্যাপক জনসমাগম হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই লক্ষ মানুষ রামমন্দির ও রামলালার দর্শন করতে আসছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। যা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। বস্তুত, মন্দির উদ্বোধনের পরেই অযোধ্যায় লোকের ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখতে অযোধ্যা গিয়েছিলেন। ট্রেন এবং সড়কপথে অযোধ্যায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। এখনও সেই ভিড় পাতলা হয়নি বলেই খবর।

অযোধ্যার এমন পরিস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের আপাতত অযোধ্যায় আসার কর্মসূচি বাতিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গ থেকে সরাসরি বিভিন্ন রাজ্যের শীর্ষনেতাদের ফোন করে আপাতত তাঁদের অযোধ্যা সফর বাতিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মর্মে বিজেপির দফতর থেকে ফোন এসেছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর কাছেও। দলের নির্দেশ পাওয়ার পরেই নিজেদের অযোধ্যা সফল বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। পরিষদীয় দলের সদস্যদেরও তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের সকলের রামমন্দির দেখতে যাওয়ার কর্মসূচি ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দল থেকে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আপাতত দলীয় নেতা-কর্মীদের অযোধ্যা যেতে নিষেধ করেছেন। তাই আমাদের অযোধ্যা সফর বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। দল যখন আবার নির্দেশ দেবে, আমরা তখনই রামমন্দির এবং রামলালাকে দেখতে যাব।’’

১০ ফেব্রুয়ারি রামমন্দির দেখতে যাওয়ার খবরে উৎসাহী হয়ে পড়েছিলেন বিজেপির বিধায়করা। শুভেন্দুর বার্তা পাওয়ার পর তারা খানিকটা মুষড়েই পড়েছেন। বিজেপির এক প্রবীণ বিধায়কের কথায়, ‘‘টিভিতে রামমন্দির আর রামলালাকে দেখেছি। কিন্তু নিজের চোখে দেখতে চেয়েছিলাম। শুভেন্দুবাবু আমাদের অযোধ্যা যাওয়ার কথা বলেছিলেন, তখন খুব উৎসাহী হয়েছিলাম। কিন্তু এখন তিনিই আমাদের জানিয়েছেন, অযোধ্যাযাত্রা আপাতত স্থগিত। কারণ, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মনখারাপ হলেও কিছু করার নেই। দল আবার কবে নির্দেশ দেবে, সেই অপেক্ষাতেই থাকতে হবে।’’ তবে ২২ জানুয়ারি মন্দির উদ্বোধনের পরদিনই বিজেপির ভগবানপুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি একক প্রচেষ্টায় সস্ত্রীক অযোধ্যা গিয়ে রামমন্দির ও রামলালার দর্শন করে এসেছেন।

অযোধ্যায় অত্যাধিক জনসমাগমের জেরে প্রায় নিয়ম করে সেখানে যেতে হচ্ছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগীকে। সোমবারও লখনউ থেকে অযোধ্যায় গিয়ে প্রশাসনিক কাজকর্ম খতিয়ে দেখেছেন। রামমন্দিরের পাশাপাশি অযোধ্যার হনুমানগড়ি মন্দিরে গিয়েও সেখানকার পরিস্থিতি দেখে এসেছেন যোগী। মনে করা হচ্ছে, জনতার চাপ না কমলে বিজেপি নেতৃত্ব তাঁদের নেতা-কর্মীদের অযোধ্যায় পা রাখার অনুমতি দেবেন না।

আরও পড়ুন
Advertisement