West Bengal Ration Distribution Case

শাহজাহানের বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে সময় চাইল ইডি, কঠিন পদক্ষেপ না করার অনুরোধ শুনলই না কোর্ট

‘নিখোঁজ’ শাহজাহান কী ভাবে পুলিশের চোখ এড়িয়ে তাঁর আইনজীবীর কাছে তাঁর হস্তাক্ষর পৌঁছে দিলেন তা নিয়ে ধন্ধের মধ্যেই মঙ্গলবার শাহজাহানের আগাম জামিনের মামলা ওঠে আদালতে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:১৯

—ফাইল চিত্র।

শেখ শাহজাহানকে কেন সমন পাঠানো হয়েছে? তার জবাব দিতে আদালতের কাছে সময় চাইল ইডি। একই সঙ্গে শাহজাহানের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ না করার অনুরোধ শুনে পাল্টা কটাক্ষও করল তারা। আদালত কক্ষে শাহজাহানের আইনজীবীদের লক্ষ করে ইডি বলল, ‘‘আপনারা তো খুবই নরম মনোভাব দেখিয়েছেন!’’ মুখে না বললেও কৌশলে শাহজাহানের গ্রামে ইডির উপর হামলার কথাই যে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা অনেকের কাছেই স্পষ্ট।

Advertisement

মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে শুনানি ছিল শেখ শাহজাহানের আগাম জামিন মামলাটির। সেই মামলা আদালতে শুনানির জন্য উঠতেই শাহজাহানের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, কেন শাহজাহানকে তলব করছে ইডি? তাঁর বিরুদ্ধে তাঁদের হাতে কী প্রমাণ আছে? এরই জবাবে ইডি আদালতকে জানায়, যে হেতু শাহজাহানের আগাম জামিনের আবেদনটি সোমবারই জমা পড়েছে, তাই এ ব্যাপারে প্রস্তুত ছিল না ইডি। প্রমাণ দাখিলের জন্য আদালতের কাছে শনিবার পর্যন্ত সময় চায় তারা। এ কথা শুনে বিচারক শাহজাহানের মামলাটি শনিবার পর্যন্ত পিছিয়ে দেন। এ কথা শুনে শাহজাহানের আইনজীবীরা পাল্টা আদালতকে বলেন, সে ক্ষেত্রে শনিবার পর্যন্ত যাতে শাহজাহানের বিরুদ্ধে কোনও কঠিন পদক্ষেপ না করা হয়, তার জন্য ‘নো-কোঅরসিভ অ্যাকশন’-এর নির্দেশ দিক আদালত। সে প্রসঙ্গেই উড়ে আসে ইডির আইনজীবীর মন্তব্য।

শাহজাহানের আইনজীবীর অনুরোধ শুনেই বিচারক বলে দিয়েছিলেন, তিনি এ ধরনের কোনও নির্দেশ দেবেন না। অর্থাৎ শনিবার পর্যন্ত শাহজাহানের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ না করার আর্জি সরাসরি খারিজ করে দেয় আদালত। সেই সময়েই আদালত কক্ষে দাঁড়িয়ে ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘আপনারা তো খুবই নো-কোঅরসরিভ (নরম মনোভাব) দেখিয়েছেন!’’

রেশন মামলার তদন্তে নেমে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের থেকে পাওয়া নামের সূত্র ধরে শাহজাহানের বাড়িতে পৌঁছেছিল ইডি। কিন্তু গত ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের সন্দেশখালির বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেলে শাহজাহানের অনুগত গ্রামবাসীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয় ইডিকে। জখম ইডি অফিসারদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। মুখে না বললেও মঙ্গলবার আদালতে ইডি সে কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন বলে অনেকের ধারণা।

প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানকে খুঁজছে রাজ্যের পুলিশ। খুঁজছে তদন্তকারী সংস্থা ইডিও। অথচ তিনি কোথায় তার খোঁজ মঙ্গলবার পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। যদিও সোমবার তাঁর আইনজীবী আদালতে শাহজাহানের হয়ে জামিনের আবেদন করেছেন। যা তাঁর সই ছাড়া সম্ভব হত না। ‘নিখোঁজ’ শাহজাহান কী ভাবে পুলিশের চোখ এড়িয়ে তাঁর আইনজীবীর কাছে তাঁর হস্তাক্ষর পৌঁছে দিলেন, তা নিয়ে ধন্ধের মধ্যেই মঙ্গলবার শাহজাহানের আগাম জামিনের মামলা ওঠে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে।

উল্লেখ্য, এর আগে এই মামলায় এক বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শাহজাহান। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে যখন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডিও, তখন পাল্টা শাহজাহান আইনজীবী মারফত আদালতকে জানান, তিনি ওই মামলায় যুক্ত হয়ে নিজের বক্তব্য জানাতে চান। কিন্তু সেই আর্জি পরে ফিরিয়েও নেন শাহজাহান। সোমবার প্রথম আগাম জামিন চেয়ে মামলা করলেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন