গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
জহওরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী থেকে রাজীব গান্ধী— তিন জনেই দার্জিলিঙে এসেছিলেন। রাহুল গান্ধীও পাহাড়ে উঠুন তাঁর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ নিয়ে। এমনটাই চান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শনিবার প্রদেশ নেতার বিধান ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন ‘ন্যায় যাত্রা’য় বাংলার সংগঠনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত আলোচনা সেরে নিতে। বৈঠকে ছিলেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিএ মির।
বিধান ভবন সূত্রে খবর, সেখানেই অধীর জানান, দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন জহওরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধী দার্জিলিংয়ে এসেছিলেন। কংগ্রেস হাইকমান্ডকে তাঁর অনুরোধ, ‘ন্যায় যাত্রা’ নিয়ে রাহুল গান্ধীও যেন দার্জিলিংয়ে আসেন। রবিরার মণিপুর থেকে শুরু হওয়ার কথা রাহুলের দ্বিতীয় দফার এই যাত্রার। আগামী ২০ মার্চ মহারাষ্ট্রের পুণেতে শেষ হবে লম্বা সফর। নিজের ন্যায় যাত্রা নিয়ে রাহুল বাংলার প্রবেশ করবেন ২৫ জানুয়ারি। ১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর জলপাইগুড়ির বক্সীরহাট দিয়ে ঢুকে নিউ জলপাইগুড়ির বাগডোগরাতে ওই দিনের যাত্রা শেষ করবেন তিনি। নিউ জলপাইগুড়ির যেখানে রাহুলের যাত্রা ওই দিন শেষ হবে, তা দার্জিলিং লোকসভার অংশ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি চান দার্জিলিং লোকসভার পাহাড় অঞ্চলে দলের নেতাকে নিয়ে যেতে। কারণ ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেস সভাপতির নজর রয়েছে দার্জিলিং আসনের দিকে। সম্প্রতি বিনয় তামাং তৃণমূল শিবির ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করায় সেই সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে বলেই মনে করছে প্রদেশ কংগ্রেসের অধীর ঘনিষ্ঠ নেতারা। সভাপতি অধীরের বক্তব্য সমর্থন করে প্রদেশ কংগ্রেসের আর এক নেতা শুভঙ্কর সরকার যোগ করেন, ১০ বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বে কখনও পাহাড়ে আসেননি নরেন্দ্র মোদী।
বিধান ভবন সূত্রে খবর, রবিবার মণিপুরে থাকছেন অধীরও। সেখানে রাহুলের ন্যায় যাত্রার দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিদের কাছে আবারও এই দাবি জানাবেন। তবে এআইসিসির একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাহুলের যাত্রার অভিমুখ আর পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। যাত্রার পরিকল্পিত অভিমুখ পরিবর্তন করে তা দার্জিলিং নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এর আগে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য এআইসিসিতে চিঠি লিখে রাহুলের ন্যায় যাত্রায় কলকাতাকে সামিল করার দাবি জানিয়েছিলেন। শনিবারের বৈঠকেও কয়েকজন নেতা পর্যবেক্ষকের কাছে সেই একই দাবি জানিয়েছেন। তবে বৈঠকেই পর্যবেক্ষক মির জানিয়ে দেন, রাহুলের কর্মসূচি বদল সম্ভব নয়।
বাংলার মোট সাতটি জেলা দিয়ে যাবে রাহুলের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলা স্পর্শ করবে তাঁর এই যাত্রা। বাংলার পাঁচ দিনের যাত্রার প্রথম দু’দিনের সবিস্তার কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। শেষ তিন দিনের সূচি চূড়ান্ত নয়। অধীর পাঁচ দিনই থাকবেন রাহুলের সঙ্গে।