(বাঁ দিকে) সোমনাথ শ্যাম। অর্জুন সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি ব্যারাকপুর কোর্টে আইজনজীবীর সেরেস্তায় বসে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করব, যাতে ওঁর (জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের) নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়।’’ কিন্তু সাংসদ অর্জুন সিংহের সেই মন্তব্যের পক্ষকাল কাটার আগে উল্টো ঘটনাই ঘটল। নবান্ন নিরাপত্তা বৃদ্ধি করল সোমনাথের। আর এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না অর্জুন।
শুক্রবার তৃণমূলের একটি সভায় যোগ দিয়ে সোমনাথ আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন। তার পরেই শনিবার সোমনাথের নিরাপত্তায় আরও চার জন সশস্ত্র পুলিশকে নিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি নৈহাটির বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে সোমনাথের নিরাপত্তা বৃদ্ধি নিয়ে অর্জুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘নো কমেন্টস!’’ তবে কি প্রকাশ্য বিতর্কে ইতি দিয়ে এ বার সংযত হচ্ছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ? উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী তাঁকে পইপই করে বুঝিয়েছেন, সোমনাথ যা-ই বলুন না কেন, তিনি যেন কোনও মন্তব্য না-করেন। অর্জুন-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, রাজ্য সভাপতির নির্দেশেই সাংসদ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
একটি খুনের ঘটনা নিয়ে অর্জুন-শ্যামের পুরনো বিবাদ নতুন মোড়কে হাজির হয়েছে সম্প্রতি। সেই খুনের ঘটনায় আবার গ্রেফতার হয়েছেন অর্জুনের ভাইপো পাপ্পু সিংহ। তার পর থেকে দু’জনের বাগ্যুদ্ধ ব্যারাকপুর তথা উত্তর ২৪ পরগনার রাজনীতিকে আলোড়িত করে চলেছে। স্থানীয় স্তরে সোমনাথ বরাবরই অর্জুন-বিরোধিতার রাজনীতি করেছেন। তিনি ছিলেন এলাকার কংগ্রেস নেতা। তবে অর্জুন ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে সোমনাথ যোগ দেন তৃণমূলে। ২০২২ সালে অর্জুন তৃণমূলে ফেরেন। সেই থেকেই ধিকিধিকি আগুন জ্বলছিল। সম্প্রতি যা দাবানলের আকার নিয়েছে। অর্জুন-শ্যাম দু’জনের কথার লড়াই থামাতে কলকাতা থেকে নৈহাটি পৌঁছে বৈঠকের চেষ্টা করেছিলেন রাজ্য সভাপতি বক্সী। অর্জুন হাজির থাকলেও যাননি সোমনাথ। বলেছিলেন, ওই বৈঠকের কথা তিনি জানতেনই না।