কুন্তলের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে নিয়ে মুখ খুলতে চাননি ওই চিকিৎসক। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তল ঘোষের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার জন্য বিধাননগর হাসপাতাল থেকে এক চিকিৎসক ইডি দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে গেলেন। চিকিৎসকের সঙ্গে ছিলেন আর এক ব্যক্তি। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা কোনও বিষয়েই মুখ খুলতে রাজি হননি।
আদালতের নির্দেশে ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে হবে ইডি হেফাজতে থাকা কুন্তলের। সেই মতোই শুক্রবার তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার কথা ছিল। অন্য বার কুন্তলকেই গাড়ি করে বিধাননগর হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ বার নিয়মবদল হওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কিছু সময় সিজিও কমপ্লেক্সে থেকে বেরিয়ে যান ওই চিকিৎসক। সংবাদমাধ্যমের তরফে কুন্তলের শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও জবাব না দিয়েই গাড়িতে উঠে পড়েন।
হুগলি জেলার বলাগড় অঞ্চলের যুবনেতা কুন্তল ঘোষকে জেরা করে ইডি আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, তাঁর মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে অন্তত ৩৫ জনের চাকরি হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের প্রায় প্রত্যেকেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে, অর্থাৎ নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, অবৈধ উপায়ে চাকরি পাওয়া স্কুলশিক্ষকরা মূলত মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা।
চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে চাকরিপ্রাপকদের কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছিল, কারা সেই টাকা তুলে আনতেন, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন ইডির আধিকারিকরা। ইডি সূত্রের দাবি, ২০১৪ থেকে অর্থাৎ তৃণমূল ক্ষমতায় আসার ৩ বছর পর থেকেই নিয়োগ দুর্নীতিতে ‘জড়িত’ কুন্তল এবং তৃণমূলের আর এক যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনেই হুগলির বলাগড় অঞ্চলের বাসিন্দা। শনিবার কুন্তল অভিযোগ করেন যে, পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা গোপাল দলপতি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের ‘আসল (মেন) লোক’। পাশাপাশি, মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডল এবং গড়িয়ার ব্যবসায়ী নীলাদ্রি ঘোষের বিরুদ্ধেও টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ধৃত যুবনেতা। কিন্তু বলাগড়ের আর এক যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি কোনও টাকা দেননি বলে জানিয়েছেন কুন্তল। শুক্রবার কুন্তল বলেছিলেন, ‘‘অনেক কোটি টাকা নিয়েছে ওরা। আমার কাছ থেকে জোর করে নিয়েছে।’’ তাপসের ঘনিষ্ঠ গোপাল সকলের হয়ে টাকা নিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন কুন্তল। তাঁর কথায়, ‘‘গোপাল দলপতি সব থেকে ‘মেন’। সকলের হয়ে টাকা নিয়েছে।’’