Kamduni Rape and Murder case

হাই কোর্টের রায়ে হতাশ কামদুনির নয়া শপথ, সুবিচারের লড়াই তীব্রতর করতে শুরু তোড়জোড়

যে লড়াই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছিলেন কামদুনিবাসী, আদালতের রায়ে হতাশ হলেও সেই লড়াই থেকে সরে আসার কথা ভাবছে না গ্রাম। দোষীদের ফাঁসির যে দাবি প্রথম দিন থেকে করেছিলেন, লড়বেন সেই লক্ষ্যেই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কামদুনি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:২৩
file image

সুবিচারের দাবিতে আন্দোলনের জোয়ারে তখন ফুঁসছে কামদুনি। — আনন্দবাজার আর্কাইভ।

ঘটনার এক দশক বাদে কামদুনিকাণ্ডের রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সেই রায় খুশি করতে পারেনি গ্রামবাসীদের। নিগৃহীতার সুবিচারের দাবিতে আন্দোলনে এক দিন পথে নেমেছিল গোটা গ্রাম। আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন যাঁরা, সেই মৌসুমী, টুম্পা কয়ালরা রায় শুনতে হাজির ছিলেন আদালত চত্বরেই। আর গোটা গ্রাম অধীর অপেক্ষায় ছিল, কখন আসবে সেই মুহূর্ত। কিন্তু আদালতের রায় শুনে হতাশ তাঁরা। যদিও থামার কথা ভাবছেন না কেউই। চোখের জল মুছে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে তৈরি হচ্ছে কামদুনি গ্রাম।

Advertisement

১০ বছর আগে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে এক কলেজ ছাত্রীর গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় শুক্রবার হাইকোর্টের রায় খুশি করতে পারেনি কামদুনির বাসিন্দাদের। ঠিক এক দশক আগে এমনই এক বর্ষার দুপুরে কলেজছাত্রী বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে নৃশংস ভাবে গণধর্ষণ করে পাঁচিলের উল্টো দিকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল নিগৃহীতার। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিল কামদুনি। আঁচ ছড়িয়ে পড়েছিল রাজ্য ছাড়িয়ে গোটা দেশে। হাজার বাধা অতিক্রম করে দাঁতে দাঁত চেপে সেই লড়াই লড়েছেন এক দশক ধরে। দাবি ছিল, দোষীদের চরম শাস্তির। হাই কোর্টের সাম্প্রতিক রায় সে দিক থেকে হতাশ করেছে। কিন্তু দমিয়ে দিতে পারেনি আন্দোলনের মেজাজকে। আবার নতুন করে লড়াইয়ে নামার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার সেই গ্রামে।

কামদুনির বাসিন্দা মলিনা কয়াল বলছেন, ‘‘এই রায়ে আমরা খুশি নই। শুধু আমি কেন, গ্রামবাসীদের কেউই খুশি হবেন না। আমরা গ্রামবাসীরা অনেক কষ্ট সহ্য করে বছরের পর বছর এই লড়াইটা লড়েছিলাম। কিন্তু আজ যা বিচার হল তাতে কেউই খুশি হতে পারবেন না।’’ ওই গ্রামেরই এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা দোষীদের ফাঁসিই চাই। যাঁরা ওদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন, তাঁদেরও কঠোর শাস্তি চাই।’’ রায় শুনে হতাশ হলেও গ্রামবাসীরা কিন্তু থমকে যেতে রাজি নন। লড়াই যখন শুরু হয়েছে, তখন তার শেষ দেখবেন-ই তাঁরা। তাই নতুন করে আবার কোমর বাঁধতে লেগেছে ছবির মতো সুন্দর গ্রাম কামদুনি। নতুন লড়াই-ই এখন বাঁচার নয়া রসদ কামদুনির।

২০১৩ সালের ৭ জুন। সে দিনও দুপুরে বৃষ্টি পড়ছিল। কোনও রকমে মাথা বাঁচিয়ে কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কামদুনিরই এক কলেজছাত্রী। পথে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। তার পর থেকে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে মূখর গোটা গ্রাম। শুক্রবার সেই মামলায় রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত সইফুল আলি এবং আনসার আলির সাজা বদলে আমৃত্যু কারাদণ্ড ঘোষণা করেছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের বেঞ্চ। নিম্ন আদালতে আর এক ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আমিন আলিকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে। নিম্ন আদালতে আমৃত্যু জেলের সাজাপ্রাপ্ত ইমানুল ইসলাম, আমিনুর ইসলাম এবং ভোলানাথ নস্করকেও ১০ বছর জেল খাটার কারণে খালাস করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

আরও পড়ুন
Advertisement