West Bengal Panchayat Election 2023

মনোনয়ন দিয়েও প্রত্যাহার বনগাঁ সাংগঠনিক তৃণমূল জেলার চেয়ারম্যানের! নেপথ্যে কি গোষ্ঠীকোন্দল

বনগাঁর চার নম্বর জেলা পরিষদের আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন তৃণমূলের শুভজিৎ দাস এবং শ্যামল রায়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তখনই প্রকাশ্যে চলে আসে। আসরে নামেন শীর্ষনেতৃত্ব।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩ ১৯:৫৯
TMC Leader Shyamal Roy withdraws his nomination after MLA Biswajit Das’s son has filed nomination

মনোয়ন প্রত্যাহারের পর তৃণমূল নেতা শ্যামল রায় জানান, দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারও করবেন। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন বনগাঁ সাংগঠনিক তৃণমূল জেলার চেয়ারম্যান শ্যামল রায়। আবার জেলা পরিষদের ওই আসনেই মনোনয়ন জমা দেন তৃণমূলের আরও এক প্রার্থী। তিনি বাগদার বিধায়ক তথা বনগাঁ তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের ছেলে শুভজিৎ। শেষমেশ সোমবার বনগাঁ মহকুমাশাসকের অফিসে গিয়ে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেন শ্যামল৷ প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে কোনওরকম মন্তব্য করেননি শ্যামল। অন্য দিকে, সাংবাদিক বৈঠক করে ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল নেতাকর্মীদের বার্তা দিয়েছেন বিশ্বজিৎ। আর এই গোটা পর্বকে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের উদাহরণ বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।

কিছু দিন আগে বনগাঁর ৪ নম্বর জেলা পরিষদের আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন তৃণমূলের শুভজিৎ দাস এবং শ্যামল রায়। জেলা পরিষদের প্রার্থী হওয়া নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তখনই প্রকাশ্যে চলে আসে। আসরে নামেন শীর্ষনেতৃত্ব। শেষে এক জনকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয়। এবং তিনি প্রবীণ তৃণমূল নেতা সিদ্ধান্ত শ্যামল। মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর শ্যামল বলেন, “দল যাকে মনোনীত করেছে সে-ই প্রার্থী। ভুল বোঝাবুঝির জেরে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। পরে তুলে নিয়েছি। শুভজিৎ প্রার্থী হচ্ছে, ওর হয়ে প্রচারেও নামব।’’

Advertisement

শ্যামল মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় ‘খুশি’ বিশ্বজিৎ। তিনি জানান, শ্যামল তাঁদের অভিভাবকের মতো। পাশাপাশি দলের বিক্ষুব্ধদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দেন বনগাঁ তৃণমূলের জেলা সভাপতি। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিশ্বজিতের বার্তা, টিকিট না পেয়ে যে তৃণমূল নেতারা নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাঁরা যেন তা প্রত্যাহার করে নেন। তিনি বলেন, ‘‘নির্দল প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে দলের হয়ে কাজ করুক। দল তাদের যোগ্য সম্মান ফিরিয়ে দেবে। আর তাঁরা যদি তা প্রত্যাহার না করেন, সারা জীবনের জন্য দলের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’

অন্য দিকে, শ্যামল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় তাঁকে ‘মানসিক রোগী’ বলে কটাক্ষ করেন বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার আগে শ্যামলবাবুর উচিত ছয়ঘরিয়ায় পাগলা গারদে গিয়ে নিজের চিকিৎসা করানো।’’ যদিও শ্যামল বলেন, ‘‘তৃণমূল প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। বিরোধীদের কোনও কটাক্ষই কাজে আসবে না।’’

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে বাগদা থেকে প্রার্থী হন বিশ্বজিৎ। জয়ী হয়ে বিধায়ক হন। কিন্তু কয়েক মাস পরেই তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। এখন তিনি বনগাঁয় তৃণমূলের সাংগঠনিক দিক দেখার দায়িত্বে। তাঁর ছেলের মনোনয়নের জন্য তৃণমূল নেতা শ্যামলের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার বিষয়ে বিজেপির কটাক্ষ, ‘‘উনি তো বিধানসভার ভিতরে বিজেপি বিধায়ক। বিধানসভার বাইরে আবার তৃণমূল। তাই তৃণমূলের লোকজন বিশ্বজিতকে কেনই বা মানছেন? উনি আগে তৃণমূল নাকি বিজেপি সেটা ঠিক করুন।’’ যদিও এ নিয়ে বিশ্বজিৎ কোনও মন্তব্য করেননি।

আরও পড়ুন
Advertisement