—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এ বার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্রে আততায়ীদের হাতে আক্রান্ত হলেন তৃণমূলের এক নেতা। শনিবার সকালে ডায়মন্ড হারবারে গুলি চলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গুলিবিদ্ধ হন শাসকদলের এক নেতা। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের নোদাখালি থানার ডোঙারিয়া মনসাতলা এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতার নাম কৃষ্ণপদ মণ্ডল। তিনি রায়পুর এলাকার তৃণমূলের যুবনেতা। শনিবার বাইকে করে যাওয়ার সময় তাঁকে লক্ষ্য করে তিন দুষ্কৃতী গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ওই যুবনেতা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে সিএমআরআই-তে চিকিৎসা চলছে তাঁর।
বস্তুত, গত কয়েক দিনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গুলি চলার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। কোথাও আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। কোথাও গুলিতে জখম হয়েছেন তৃণমূল নেতা। গত ২ জানুয়ারি মালদহের ইংরেজবাজারে তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার গুলিতে খুন হন। ওই ঘটনায় শোরগোল হয় রাজ্য রাজনীতিতে। ওই কাণ্ডের মূল চক্রী হিসাবে উঠে আসে মালদহ শহর তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির নাম। পুলিশ নরেন্দ্রনাথকে গ্রেফতার করার অনতিবিলম্বে তৃণমূল তাঁকে বহিষ্কার করে। তার পরে মালদহেরই কালিয়াচকে শাসকদলের একটি গন্ডগোলে খুন হন তৃণমূলের এক কর্মী। যদিও সেখানে গুলি চলার কথা অস্বীকার করে পুলিশ। তার মধ্যে শনিবার ডায়মন্ড হারবারে গুলি চলল।
বার বার শাসকদলের নেতা-কর্মীদের উপর গুলি চলার ঘটনায় শাসকদলের কোন্দল প্রকাশ্যে আসছে। গত বুধবার ডায়মন্ড হারবার থেকে অভিষেকও মেনে নিয়েছিলেন যে, দলে গোষ্ঠীকোন্দল আছে এবং দল বড় হলে সেটাই স্বাভাবিক বলে তিনি মনে করেন। যদিও গন্ডগোল পাকানো, গুলি, বোমাবাজির মতো ঘটনায় দলের কেউ যুক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘যদি কেউ কোনও ভাবে দলকে দুর্বল করতে চান, তাঁর বিরুদ্ধে অতীতেও দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ব্যবস্থা নিয়েছে। আগামী সময়েও এর কোনও ব্যতিক্রম হবে না। কোনও অপরাধের সঙ্গে যদি কেউ যুক্ত থাকেন, পুলিশ-প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কাউকেই রেয়াত করা হবে না।’’ পাশাপাশি অভিষেকের দাবি, সরকার এবং প্রশাসন যে যার মতো ব্যবস্থা নিচ্ছে। সেই সঙ্গে দলীয় কর্মীদের শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে বার্তা দেন অভিষেক। তাঁর ওই বক্তব্যের সপ্তাহখানেকের মধ্যে ডায়মন্ড হারবারে গুলিবিদ্ধ হলেন তৃণমূলেরই এক নেতা। যদিও এই ঘটনার নেপথ্যে কারা রয়েছেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত কোনও অভিযুক্ত আটক বা গ্রেফতার হননি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কৃষ্ণপদ সম্প্রতি রাজনীতি থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে ব্যবসায় মন দিয়েছিলেন। পিএইচই-এর ঠিকাদারির কাজ করতেন। ব্যবসায়িক কোনও শত্রুতা না কি রাজনৈতিক কারণে তাঁর উপর আক্রমণ হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।