Diamond Harbour Medical College And Hospital

তেতে উঠল ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যালও

শেষ পর্যন্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তার পরে জুনিয়র ডাক্তারদের দু’পক্ষকে বুঝিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩৬

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সকাল থেকেই অশান্ত হাসপাতাল চত্বর। এক দিকে চিকিৎসক পড়ুয়া ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সদর দরজায় তালা ঝুলিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ‘হুমকি প্রথা’ ও রক্ত বিক্রি-সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। অন্য দিকে, ধর্মতলায় অবস্থান ও অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে সকাল ১০টা থেকে দশ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে বসেছেন অধিকাংশ জুনিয়র ডাক্তার। সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালের এই ঘটনায় অস্বস্তিতে স্বাস্থ্য দফতর। যাঁরা সদর দরজায় তালা ঝুলিয়েছেন বলে অভিযোগ, তাঁরাই ‘হুমকি প্রথার’ আসল মুখ বলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দাবি করেন জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ।

Advertisement

শেষ পর্যন্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তার পরে জুনিয়র ডাক্তারদের দু’পক্ষকে বুঝিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, যাঁরা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন জুনিয়র ডাক্তার ও সাত জন ডাক্তারি পড়ুয়াকে এ দিনই হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল প্রশ্নপত্র ফাঁস ও একাধিক দুর্নীতিতে জড়িত বলে স্বাস্থ্য দফতরের অন্তর্তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায়। তাঁদেরই এক জন সৌমজিৎ বণিক বলেন, “সঠিক ভাবে তদন্ত হয়নি। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেই তো কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত বিক্রি, থ্রেট কালচার বন্ধ-সহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ, আন্দোলন। সকালে প্রশাসনিক ভবনের দরজায় তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলাম। আন্দোলন তুলে নিলেও মীমাংসার অপেক্ষায় এখানেই থাকছি।”

অন্য দিকে, ধর্মতলায় অনশনকারী চিকিৎসকদের সমর্থনে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল চত্বরে প্রতীকী অনশনে বসা জুনিয়র চিকিৎসক সাগ্নিক মিদ্যার দাবি, “যারা থ্রেট কালচার ও দুর্নীতিতে দোষী সাব্যস্ত হল, তারাই উল্টে বিক্ষোভ দেখাল! স্বাস্থ্যকর্মীদের কয়েক জনও শামিল হয়ে গেলেন! এ তো ‘উলটপুরাণ’। সত্যিকারের প্রতিবাদ করতে চাইলে তো ওরা আমাদের সঙ্গে থাকত। স্বাস্থ্য দফতরের চুরি, দুর্নীতির প্রতিবাদেই তো আমাদের আন্দোলন।”

কলেজের অধ্যক্ষ উৎপল দাঁ বলেন, “যাঁরা তালা ঝুলিয়ে দিলেন প্রশাসনিক ভবনে, তাঁরাই থ্রেট কালচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তদন্তে যে ন’জনের নাম এসেছিল, তাঁদের সোমবার হস্টেল ছাড়তে বলা হয়েছিল। হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করতে এই দিনেই তাঁরা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করলেন। যথাযথ প্রশাসনিক পদক্ষেপের কথা বলেছি।” তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলেছেন অধ্যক্ষ।

হাসপাতালের এমএসভিপি তন্ময় কান্তি পাঁজা বলেন, “এ সব নিয়ে দ্রুত কথা হবে। আপাতত পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে।” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জ়োনাল) মিতুনকুমার দে বলেন, “আন্দোলনকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে আলোচনা করা হবে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলা হয়েছে।”

আরও পড়ুন
Advertisement