তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
শুধু কথা দিয়ে প্রশাসন চালানো যায় না। তার জন্য কাজ করতে হয়। এমন কাজ, যা মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে। ডায়মন্ড হারবারে ‘সেবাশ্রয়’ পরিষেবার কথা বলতে গিয়ে এমনটাই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সেবাশ্রয়’-এর সাফল্য নিয়ে সমাজমাধ্যমে বৃহস্পতিবার একটি পোস্ট করেছেন অভিষেক। সেখানেই প্রশাসনের ‘স্বরূপ’ ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে এই স্বাস্থ্য পরিষেবার মাধ্যমে কত মানুষ কী ভাবে উপকৃত হয়েছেন, তার খতিয়ানও প্রকাশ করেছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ।
গত ২ জানুয়ারি থেকে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে বিশেষ স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করেছেন অভিষেক। বিধানসভা কেন্দ্র ধরে ধরে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। চোখ, রক্তচাপ, সুগার থেকে ক্যানসার— বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতায় চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন মানুষ। বর্তমানে ‘সেবাশ্রয়’ চলছে ফলতা বিধানসভা কেন্দ্রে। মাত্র পাঁচ দিনে সেখান থেকে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ বিনামূল্যে পরিষেবা পেয়েছেন, জানিয়েছেন অভিষেক। ২ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ‘সেবাশ্রয়’ থেকে সেবা পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৪১ হাজার মানুষ।
পরিসংখ্যানের কথা বলতে গিয়ে অভিষেক জানিয়েছেন, শুধু বৃহস্পতিবারই ফলতার ৪০টি স্বাস্থ্য ক্যাম্পে ১৩ হাজার ৪৯৩ জনের চিকিৎসা হয়েছে। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা তো বটেই, ওষুধপত্রও দেওয়া হয়েছে এই সমস্ত ক্যাম্প থেকে। অভিষেক বলেন, ‘‘সেবাশ্রয় শুধু পরিসংখ্যা নয়, সেবাশ্রয় হল পরিসংখ্যানের পিছনে থাকা মুখগুলো। যে শিশু সময়ে চিকিৎসা পেল, যে বয়স্ক মানুষ একটু স্বস্তি পেলেন, যে পরিবার সাহায্য পেল, তাঁদের জন্যই সেবাশ্রয়। আমরা একসঙ্গে প্রমাণ করে দিচ্ছি, শুধু কথায় নয়, কাজ দিয়ে প্রশাসনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। এমন কাজ, যা মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে।’’
নতুন বছরের শুরুতেই অভিষেকের ‘সেবাশ্রয়’ জনপ্রিয়তা পেয়ে গিয়েছে। তাঁর কেন্দ্রের এই স্বাস্থ্যশিবিরে দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ আসছেন। বিনামূল্যে পাচ্ছেন চিকিৎসা পরিষেবা। কিছু দিন আগে ‘সেবাশ্রয়’-এর কথা শুনে সুদূর জলপাইগুড়ি থেকে এক শিশুকে ডায়মন্ড হারবারে নিয়ে এসেছিল তার পরিবার। অভিষেক তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন। খানাকুল থেকে মেরুদণ্ডে সমস্যা নিয়ে আসা এক শিশুর চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি।
কিন্তু কেন এই পৃথক উদ্যোগ? রাজ্য সরকারের তরফেই তো বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। একাধিক স্বাস্থ্য প্রকল্পও রয়েছে রাজ্যের। তবে কি নিজের কেন্দ্রে আলাদা করে শিবির বসিয়ে ‘সমান্তরাল’ কোনও স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করতে চান তৃণমূল সেনাপতি? প্রশ্ন উঠেছে। জল্পনার জবাবও দিয়েছেন তিনি। বুধবারই অভিষেক ফলতা থেকে জানান, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সঙ্গে তাঁর সেবাশ্রয়ের তুলনা করা ঠিক নয়। বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার তার মতো যথেষ্ট করেছে। আমি আমার মতো করে চেষ্টা করেছি। হয়তো একটা গ্রাম পঞ্চায়েতে একটা হাসপাতাল আছে, আমি সেখানে চেষ্টা করেছি একটা গ্রাম পঞ্চায়েতে চারটে করে ক্যাম্প করার।’’ তার পর বৃহস্পতিবার সেই ফলতাতেই ‘সেবাশ্রয়’-এর সাফল্যের খতিয়ান প্রকাশ করলেন অভিষেক।