বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাত্রা। গোবরডাঙায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হু-হু করে বেড়ছে যমুনা নদীর জল। নদীর দু’পার ছাপিয়ে লোকালয়েও তা ঢুকতে শুরু করেছে। নাগাড়ে বৃষ্টির জমা জল ও যমুনার জল ঢুকে ইতিমধ্যেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে গোবরডাঙা পুরসভার বেশ কিছু এলাকা। কোথাও বাসিন্দাদের ঘরের মধ্যে জল, কোথাও উঠোনে হাঁটু জল। ঘরের মধ্যে ছোট মাছও ঘুরে বেড়াচ্ছে। সাপ, মশা ও বিভিন্ন পোকার উপদ্রব বেড়েছে। লোকালয়ের মধ্যেই চলছে নৌকায় যাতায়াত। কয়েকটি পরিবারকে ইতিমধ্যেই স্কুলের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। চুরির ভয়ে অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে সেখানে আসতে চাইছেন না।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর বর্ষার সময় জলবন্দি হওয়াটা তাঁরা ভবিতব্য বলেই মেনে নিয়েছেন। গোবরডাঙায় নিকাশির প্রধান মাধ্যম যমুনা নদী। পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের অভাবে পলি জমে নদী এখন মৃতপ্রায়। সেই কারণেই প্রতি বছর মানুষকে জলযন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দারা নতুন করে যমুনা নদী সংস্কারের দাবি তুলেছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘জলবন্দি হয়ে আমরা ত্রাণ চাই না। আমরা চাই যমুনা নদী সংস্কারের ব্যবস্থা করা হোক।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কোথাও আংশিক, কোথাও বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে বিচ্ছিন্ন ভাবে যমুনা সংস্কার করা হয়েছিল পলি তুলে। পলি নদীর পারে রাখা হয়েছিল। বৃষ্টিতে সেই পলি ধুয়ে ফের নদীতে মিশে গিয়েছিল বলে অভিযোগ।
নিম্নচাপের জেরে শুক্রবার থেকে বৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। গোবরডাঙার পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই দু’টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। অন্য স্কুল-কলেজগুলি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ত্রিপল ও শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে।’’ যমুনা নদী সংস্কারের বিষয়ে শঙ্কর বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন যমুনা সংস্কার হয় না। পলি জমে নাব্যতা কমে গিয়েছে। নদী সংস্কার করাটা জরুরি। পার্থ ভৌমিক সেচমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁকে যমুনা সংস্কারের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমরা আশাবাদী, নতুন সেচমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। নদী সংস্কার হবে।’’
বেহাল নিকাশি নিয়ে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘দ্রুত আমরা নিকাশির জন্য একটি অনুমোদন পেতে চলেছি। সেটা পেলে নিকাশি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হবে।’’