(বাঁ দিকে) সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তায় পুলিশ। ধর্নামঞ্চে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার করা হল। হাসপাতালের আউটপোস্টে বৃদ্ধি করা হল পুলিশকর্মীর সংখ্যা। আগে ওই ফাঁড়িতে ২৮ জন পুলিশকর্মী ছিলেন। রবিবার থেকে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪০। শুধু তা-ই নয়, হাসপাতাল চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় নতুন সিসি ক্যামেরাও বসেছে।
রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ, রোগীর পরিবারের সদস্যেরা হাসপাতালের চারতলায় উঠে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় মহিলাদের ওয়ার্ডে। এমনকি, মহিলা চিকিৎসকদের ঘর থেকে টেনে বার করে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তার, নার্স-সহ সাত জন আহত হয়েছেন বলে খবর। নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলে সে দিন রাত থেকেই কর্মবিরতিতে ওই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন নার্সরাও।
নিরাপত্তা-সহ আরও কয়েক দফা দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন সাগর দত্তের জুনিয়র ডাক্তারেরা। হাসপাতাল চত্বরেই বাধা হয়েছে ধর্নামঞ্চ। দফায় দফায় নিরাপত্তার দাবিতে সুর চড়াচ্ছেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, যত দিন পর্যন্ত না তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে, তত দিন তাঁরা কাজে ফিরবেন না। এমনকি, হাসপাতালের ‘হুমকি সংস্কৃতি’র বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা করছেন, সে দিকেও তাকিয়ে আছেন তাঁরা।
শনিবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় আলোচনা করেন। হাসপাতালে ছুটে যান রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। গিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়াও। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখেন তিনি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাসও দেন। তবে তার পরও নিজেদের দাবিতে অনড় আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরই নিরাপত্তা বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। নিরাপত্তার জন্য ২৮ জন পুলিশকর্মীকে নিয়ে ফাঁড়ি তৈরি হয়েছিল হাসপাতালে। রবিবার সেই সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে। এ ছাড়াও, সিসি ক্যামেরা বাসানোর কাজও শুরু হয়েছে রবিবার সকাল থেকে। তবে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এখনও আশ্বস্ত হতে পারছেন না জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের বক্তব্য, “সুপ্রিম কোর্টে বলা হয়েছিল ১৪ দিনে সিসি ক্যামেরা বসে যাবে। কিন্তু ১২তম দিনে এসে কাজ শুরু হয়েছে। কথা ছিল ৩৬০টি সিসি ক্যামেরা বসানোর। এসেছে ৪০টি।”