এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
হাত-পা বাঁধা। কোমরেও বাঁধা ইট। ওই অবস্থায় এক তরুণীর দেহ মিলল পুকুরে। শনিবার সকালে এ নিয়ে চাঞ্চল্য উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ন্যাজাট থানা এলাকায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন ওই তরুণী। ইতিমধ্যে দেহ চিহ্নিত করেছে পরিবার। তাদের অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে মেয়েকে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, যে আদিবাসী তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়েছে, গত ৪ ডিসেম্বর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ন্যাজাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল পরিবার। শনিবার ভোরে ন্যাজাট থানার ঘোষপুর এলাকার একটি পুকুরে একটি দেহ উদ্ধার হয়। দেহটি যে ওই নিখোঁজ তরুণীর, তা নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, দেহ যখন তোলা হয়, তখন হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ছিল। মৃতার কোমরেও একটি ইট বাঁধা ছিল।
মৃতার বয়স ১৮ বছর। পরিবার সূত্রে খবর, গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় গবাদি পশুদের পরিচর্যার জন্য গোয়ালঘরে গিয়েছিলেন তরুণী। বাড়ির অদূরেই গোয়ালটি। তরুণীর সঙ্গে তাঁর মা-ও ছিলেন। তবে মায়ের দাবি, ‘‘আমি আগেই বাড়িতে চলে এসেছিলাম। মেয়ে বলেছিল, ‘তুমি যাও, আমি আসছি।’ কিন্তু তার পর অনেকটা সময় কেটে যায়। মেয়ে না ফেরায় ওর খোঁজে বেরোই। কিন্তু কোথাও পাইনি ওকে।’’
প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসা করে, রাস্তাঘাটে খুঁজেও মেয়েকে না পেয়ে সে দিন রাতেই ন্যাজাট থানায় অভিযোগ করেছিলেন তরুণীর বাবা-মা। তিন দিনের মাথায় মেয়ের দেহ উদ্ধারের খবর পেলেন তাঁরা। জানা যাচ্ছে, শনিবার ভোরে কয়েক জন প্রাতর্ভ্রমণকারী এলাকার পুকুরে একটি দেহ ভাসতে দেখেন। তাঁরা আশপাশের লোকজনকে ডাকাডাকি করেন। খবর যায় থানাতেও। পরে পুলিশ গিয়ে পুকুর থেকে দেহ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে শুরু হয়েছে। যদিও এখনও এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়নি। বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার হুসেন মেহদী রহমান বলেন, ‘‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কারও উপর সন্দেহপ্রকাশ করেনি পরিবার। আমরা তদন্ত করে দেখছি। শীঘ্রই জানা যাবে, কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’ দেহ উদ্ধারের পর এলাকা পরিদর্শনে যান বসিরহাট পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ এবং অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া যেসব জায়গায় মেয়েটিকে নিখোঁজের আগে দেখা গিয়েছিল, সেই জায়গাগুলিতেও যাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। কথা বলেন মৃতার পরিবারের সঙ্গে।
অন্য দিকে, মৃতার ঠাকুরমা জাতীয় মহিলা কমিশনকে চিঠি দিয়ে নাতনির মৃত্যুর তদন্তের দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, দেহ দেখে ‘পরিষ্কার’ যে নাতনিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। যদিও এ নিয়ে পুলিশ কোনও বিবৃতি দেয়নি।