Basirhat Incident

বসিরহাটে তৃণমূল কর্মীকে গুলি চালানোর ভিডিয়ো আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে, কী বলছে পুলিশ?

সূত্রের খবর, সিসিটিভি ভিডিয়োয় গুলি করে যাঁকে পালাতে দেখা গিয়েছে, তাঁর নাম আয়ুব গাজি। এর আগেও গুলি চালিয়ে খুনের ঘটনায় আয়ুব পাঁচ বছর জেল খেটেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪ ০৮:২৩
(বাঁ দিকে) প্রকাশ্যে আসা সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য। আহত তৃণমূল কর্মী আলতাফ মালি (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) প্রকাশ্যে আসা সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য। আহত তৃণমূল কর্মী আলতাফ মালি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

শুক্রবার রাতে উত্তপ্ত বসিরহাট। বসিরহাটের একটি দোকানে ঢুকে তৃণমূল কর্মী আলতাফ মালিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। গুলি করে পালানোর সময় দুষ্কৃতীরা একটি বোমা ভর্তি ব্যাগ রেখে পালায় বলেও অভিযোগ। সেই ঘটনারই সিসিটিভি ফুটেজ আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে এসেছে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে যে ভিডিয়ো এসেছে, তাতে পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, ওই দোকানের বাইরে মোবাইল নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন এক ব্যক্তি। এমন সময় আচমকাই দ্বিতীয় এক ব্যক্তি দোকানের বাইরে আসেন। দোকানের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে গুলি করেই দৌড়ে পালিয়ে যান। যদিও ভিডিয়োতে দোকানের বাইরে বোমা ভর্তি ব্যাগ রেখে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়েনি।

সূত্রের খবর, সিসিটিভি ভিডিয়োতে গুলি করে যাঁকে পালাতে দেখা গিয়েছে তাঁর নাম আয়ুব গাজি। এর আগে গুলি চালিয়ে খুনের ঘটনায় আয়ুব পাঁচ বছর জেল খেটেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে বসিরহাট থানার পুলিশ। আয়ুবকে খুঁজে বার করতে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আলতাফের উপর হামলার ঘটনার নেপথ্যে আর কে বা কারা জড়িত, তা এখনও জানা যায়নি। হামলার কারণও অস্পষ্ট। পরিস্থিতি যাতে খারাপ না হয়, তাই এলাকায় পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। শুক্রবার রাতে বসিরহাটের পিফা এলাকায় ন্যাজাট রোডে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। শঙ্করপুর এলাকায় একটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের দাবি, ওই দোকানেই ‘ওঠাবসা’ ছিল আয়ুবের।

স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃণমূল কর্মী আলতাফ বসিরহাট থানার পিফা এলাকার বাঁশতলার একটি দোকানে এসেছিলেন। এলাকায় তিনি ঠিকাদারির কাজ করতেন। দোকানে কেনাকাটার সময় আচমকাই পিছন থেকে এসে আলতাফকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলির শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়েরা। দুষ্কৃতীকে ধরতে কয়েক জন তাড়া করেন। সে সময়ই অভিযুক্তের সঙ্গে থাকা ব্যাগ এলাকারই একটি দোকানের সামনে ফেলে পালান বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, ওই ব্যাগে বেশ কয়েকটি তাজা বোমা ছিল। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বসিরহাট থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ওই বোমা ভর্তি ব্যাগ উদ্ধার করে।

অন্য দিকে, গুরুতর আহত অবস্থায় আলতাফকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আলতাফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাই তাঁকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় বিরোধীদের দিকেই আঙুল তুলেছে তৃণমূল। বসিরহাটের অঞ্চল সভাপতি আবদার রহমান মণ্ডল বলেন, ‘‘আলতাফ তৃণমূলের একজন সক্রিয় কর্মী। এলাকার বিভিন্ন কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। সেই কারণেই বিরোধীরা এই কাজটা করিয়েছে। লোকসভা ভোটে বিরোধীরা এখানে ভাল ফল করতে পারেনি, সেই রাগ থেকেই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।’’

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সভাপতি পলাশ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূলের দাবি মিথ্যা। এই ঘটনায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের কোনও যোগ নেই। আলতাফবাবুর কোনও ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল কি না, কিংবা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত। বসিরহাটে জয়ের পরেই এমন ঘটনা ঘটছে, যা নিয়ে তৃণমূলের ভাবা উচিত। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের উচিত দোষীদের খুঁজে বার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement