—প্রতীকী চিত্র।
স্বরূপনগর ব্লকের বাঁকড়া গোকুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১টি আসনের মধ্যে ১০টিতে জিতেছে তৃণমূল। তবে বিরোধীরাই জোট গড়ে বোর্ড গড়ল এখানে। প্রধান হয়েছেন কংগ্রেসের। উপপ্রধান বিজেপির।
তৃণমূল বিধায়ক বীণা মণ্ডলের বাড়ির পাশের পঞ্চায়েত বাঁকড়া গোকুলপুর। ২০১৮ সালে তৃণমূলের দখলে ছিল এই পঞ্চায়েত। এ বার ২১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ১০টি আসন। কংগ্রেস ৪টি, সিপিএম ৪টি, আইএসএফ একটি, বাম সমর্থিত নির্দল একটি, বিজেপি একটি আসন পায়। সব বিরোধী এখানে একজোট হয়েছে। ফলে বোর্ড গড়েছে তারাই। প্রধান হয়েছেন কংগ্রেসের লাবণী প্রামাণিক। উপপ্রধান বিজেপির পুষ্প মণ্ডল।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই এলাকা বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। সেখানকার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রের জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সাহায্য চেয়েছিলেন বিরোধী জয়ী প্রার্থীরা। বোর্ড গঠনের আগের দিন শান্তনুর গাইঘাটার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছিল জয়ী বিরোধী প্রার্থীদের। সিপিএম নেতা হামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, “জয়ীদের তৃণমূলে টানতে অনেক প্রলোভন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেউ তাতে সাড়া দেননি। তৃণমূল ভোটের দিন এবং গণনা কেন্দ্রে ভোট লুট করেছে পুলিশ-প্রশাসনের মদতে। তারপরেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। যদি ভোট সঠিক ভাবে করতে দিত, তা হলে তৃণমূল এখানে একটিও আসন পেত না। দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়তে সকলে মিলে তৃণমূলকে সরিয়েছে।”
এই পঞ্চায়েতে বরাবর বিভিন্ন দল ক্ষমতায় এসেছে। কখনও বাম, কখনও কংগ্রেস, কখনও তৃণমূল। বিজেপি নেতা রিপন বিশ্বাস বলেন, “এটা স্থানীয় স্তরের সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে দলের রাজনৈতিক অবস্থানের কোনও যোগ নেই। স্থানীয় মানুষ দেখেছেন, কী ভাবে তৃণমূল দেদার দুর্নীতি করেছে বিভিন্ন কাজে। তাই মানুষ চেয়েছেন তৃণমূল ও দুর্নীতিমুক্ত বোর্ড গঠন করতে। অনেক প্রলোভনের মধ্যেও যখন কেউ মাথা নত করেননি, তখন আশা করা যায় টিকে থাকবে এই বোর্ড।”
তৃণমূল নেতা দুলালচন্দ্র ভট্টাচার্যের কথায়, “প্রধান-উপপ্রধানরাই দ্রুত চলে আসবেন আমাদের দলে। মানুষের কাজ করতে গেলে তৃণমূলই যে শ্রেষ্ঠ, এটা দ্রুত বুঝতে পারবেন ওঁরা।’’ গোটা ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৯টিতেই বোর্ড গঠন করেছে তৃণমূল। সেই তথ্য জানিয়ে দুলাল বলেন, ‘‘চাইলে এখানেও দল ভাঙাতে পারতাম। তবে তা করা হয়নি। অশান্তি আমরা চাইনি।” ভোটে কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে দুলালের পাল্টা দাবি, ভোটে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে দোষ চাপাচ্ছে বিরোধীরা। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বীণা মণ্ডলকে বার বার ফোন করা হলেও উত্তর মেলেনি।