Mother and son

নিজের ছেলেকে ‘চুরির দায়ে’ মার খাওয়া মা ফিরে পেলেন সন্তানকে! ভুলতে চান বিরাটির সেই দুঃস্বপ্ন

ছেলেধরা গুজবের জেরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। জায়গায় জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার বিরাটি স্টেশনে ঘটে এমনই এক ঘটনা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বিরাটি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ১৩:৩৬
Birati

সন্তানকে কোলে নিয়ে বাসন্তী। —নিজস্ব চিত্র।

সাত দিন পর কোলের শিশুকে ফিরে পেলেন বাসন্তী পাণ্ডে। শিশুচোর সন্দেহে উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটি স্টেশনে গত বুধবার তাঁকে ঘিরে ধরেন সহযাত্রীরা। মারধর করা হয়। তাঁকে তুলে দেওয়া হয় আরপিএফের হাতে। শেষমেশ সামনে আসে শিশুর মা তিনিই। কিন্তু শিশুটিকে চাইল্ড লাইনে পাঠিয়ে দেওয়ায় নানা ঝক্কি পোয়াতে হয়েছে বাসন্তীকে। মঙ্গলবার শিশুকে ফিরে পেলেন বামনগাছির মুরালি এলাকার বাসিন্দা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বুধবার বামনগাছি স্টেশনে দত্তপুকুর থেকে শিয়ালদহগামী একটি লোকাল ট্রেনের লেডিস কম্পার্টমেন্টে উঠেছিলেন বাসন্তী। কোলের শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু, সহযাত্রীরা শিশুচোর সন্দেহে ঘেরাও করেন। হেনস্থা করা হয় তাঁকে। খবর যায় আরপিএফের কাছে। বিরাটি স্টেশনে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তখন দুধের শিশুটিকে পাঠানো হয় চাইল্ড লাইনে। যদিও সে দিনই রাতে প্রমাণ হয়ে যায় যে বাচ্চাটি ওই মহিলারই। ছেলেধরা গুজবের মধ্যে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। কিন্তু, চাইল্ড লাইনে কোনও শিশুকে পাঠানো হলে বিভিন্ন আইনি জটিলতা টপকাতে হয়। সপ্তাহখানেক পর শিশুকে পেয়ে হাসি ফুটেছে বাসন্তীর মুখে। কিন্তু, তিনি আর এ নিয়ে কোনও কথা বলতেই চান না। যেন দুঃস্বপ্ন ভেবে গত সাত দিনের যন্ত্রণাকে ভুলতে চাইছেন। প্রতিবেশীরাও খুশি। এক পড়শির কথায়, ‘‘বাচ্চা তো ওরই। একটু ভোলাভালা আছে মেয়েটি। কিন্তু, শুধু সন্দেহ করে এক জন মাকে তার শিশুর কাছ থেকে আলাদা করে দেওয়া যায়?’’ পড়শিরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিন শুধু কান্নাকাটি করতে দেখেছেন ওই মহিলাকে। সবাই চেয়েছিলেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মায়ের কাছে ফিরুক শিশুটি।

ছেলেধরা গুজবের জেরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। জায়গায় জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। সেই আবহে গত বুধবার শিশুচুরির অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায় বিরাটি স্টেশনে। তদন্তে নেমে রেলপুলিশ জানতে পারে, নিগৃহীতা মহিলাই শিশুটির মা। তাঁর পরিবারকেও খবর দেওয়া হয়। ওই দিন রাতেই জিআরপিতে গিয়েছিলেন মহিলার স্বামী। রামেশ্বর পাণ্ডে নামে ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রীর নাম বাসন্তী। স্ত্রীর আদি বাড়ি ওড়িশায়। রামেশ্বর থাকেন বিহারে। তাঁরা বামনগাছিতে একটি বাড়িভাড়া করে থাকেন। ওই শিশুটি তাঁদেরই সন্তান। জিআরপি সূত্রে খবর, পরিচয় যাচাইয়ের পরে বাসন্তীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু শিশুটিকে পাঠানো হয় চাইল্ড লাইনে।

আরও পড়ুন
Advertisement