পুকুরের জল ব্যবহার করছে স্কুলের পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ দিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে স্কুলের টিউবওয়েল। পুকুরের জল দিয়েই শিশুদের জন্য রান্না করা হচ্ছে মিডডে মিল। বাসনপত্র, শিশুদের হাতমুখ ধোয়ার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে সেই পুকুরের জল!
রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের পূর্ব শ্রীধরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। মথুরাপুর ২ বিডিও নাজির হোসেন বলেন, “জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধান করা হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা না মিটলে স্কুলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে জলের ব্যবস্থা করা হবে।”
এলাকার বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা জানান, স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা শতাধিক। প্রায় আট মাস ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে স্কুলের টিউবওয়েল। অভিযোগ, আশেপাশের এলাকাতেও কোনও টিউবওয়েল নেই। বেশ কিছুটা দূরে একটি মাত্র টিউবওয়েল রয়েছে। তার উপরে নির্ভরশীল বহু মানুষ। গোটা গ্রামেই জল সঙ্কট তীব্র। বহু বার গ্রামে টিউবওয়েলের দাবি জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে দাবি স্থানীয় মানুষের।
এলাকার বাসিন্দা নির্মলা হালদার, দীপু বর বলেন, “স্কুলের টিউবওয়েল আট মাসের উপরে খারাপ। এখন ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য পুকুরের জলে খাবার তৈরি হচ্ছে। অনেকটা দূরে একটা টিউবওয়েল আছে। গ্রামেও আর কোনও টিওবওয়েল নেই। প্রধান শিক্ষককে বলেছি, পঞ্চায়েতকেও জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা করেননি।”
প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ বৈরাগী বলেন, “সত্যিই পড়ুয়াদের অসুবিধা হচ্ছে। অনেক সময়ে কেনা জলও ব্যবস্থা করি। দূর থেকে জল এনে রান্না করা হয়। পানীয় জলের অভাবে এক প্রকার বাধ্য হয়েই মাঝে মধ্যে পুকুরের জল ব্যবহার করতে হয়। টিউবওয়েল বসানোর জন্য পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসন এবং শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি। প্রতিবার আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু আজও স্কুলে টিউবওয়েল সারানো হল না।”
এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপির। অভিযোগ, বিরোধী দল জেতায় পঞ্চায়েতের তরফে জলের জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। স্থানীয় বিজেপি সদস্য তথা ভিইসি (ভিলেজ এডুকেশন কমিটি)-এর চেয়ারম্যান যমুনা গায়েন বলেন, “ছোট ছোট শিশুরা পানীয় জল পাচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে অনেক দূর থেকে জল নিয়ে আসতে হয়। বুথ থেকে বিজেপি জিতেছে বলে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত জলের কল বসাচ্ছে না। মানুষের উপরে এই রকম ভাবে জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে ওরা। তীব্র গরমেও মানুষকে শাস্তি দিতে চাইছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান জগদ্ধাত্রী হালদার। তিনি বলেন, “পানীয় জলের জোগান ঠিক আছে। অনেক সময়ে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় জল পাওয়া যায় না। আমরা তার বিকল্প ব্যবস্থা করি। তবে বিরোধীদের অপপ্রচারের কোনও উত্তর নেই।”