সুন্দরবনে মেচুয়া জঙ্গলের কাছে আক্রমণ করে বাঘটি। ফাইল চিত্র।
বাঘের হামলায় সুন্দরবনে আবার এক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হল। সোমবার বিকেলে বাঘের আক্রমণের মুখে পড়েন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির বাসিন্দা বাসুদেব বৈদ্য। তাঁর ঘাড়ে আঘাত করে বাঘ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই মৎস্যজীবীর। মঙ্গলবার তাঁর দেহ উদ্ধার করে গ্রামে আনা হয়েছে।
গত ১৯ জানুয়ারি কাঁকড়া ধরতে নৌকা নিয়ে বেরিয়েছিলেন বাসুদেব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও ২ জন মৎস্যজীবী। সোমবার বিকেলে মেচুয়ার জঙ্গলের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল তাঁদের নৌকা। সেই সময় নৌকার পাটাতনের উপর বসেছিলেন বাসুদেব। আচমকা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ। বাকি ২ মৎস্যজীবী লাঠিসোঁটা নিয়ে তাড়া করতে জঙ্গলে ফিরে যায় দক্ষিণরায়। ফলে বাসুদেবের দেহ টেনে নিয়ে যেতে পারেনি বাঘটি। বাসুদেবের নৌকায় ছিলেন বিপ্লব নাইয়া নামে এক মৎস্যজীবী। তিনি বাঘের আক্রমণের ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন।
মেচুয়ার যে জঙ্গলে বাঘ হামলা চালিয়েছে, তা সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের মধ্যে পড়ে। সেখানে কাউকেই যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। ফলে ওই মৎস্যজীবীরা কী ভাবে সেখানে গেলেন, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনায় তাঁদের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের অতিরিক্ত ডিরেক্টর সৌমেন মণ্ডল।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হালিম নস্কর বলেছেন, ‘‘আয়লা, আমপান, ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চাষবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই সুন্দরবনের মানুষের জীবন-জীবিকা জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরার উপরেই নির্ভর করে।’’ বাঘের আক্রমণে মৎস্যজীবীর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া।
বর্ষবরণের রাতেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি এলাকায় বাঘের হামলার মুখে পড়েছিলেন এক মৎস্যজীবী। সে বার সুন্দরবনের হলদিবাড়ির গভীর জঙ্গল লাগোয়া রংমারির চরে বাঘের হামলার মুখে পড়েছিলেন অমল দণ্ডপাট নামে এক মৎস্যজীবী। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই মৎস্যজীবীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।