50 years of Batayanik

সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘বাতায়নিক’, উৎসবমঞ্চ মুখরিত অনন্যব্রত, পূবালী, শ্রীকান্তদের উপস্থাপনায়

সময় যত এগিয়েছে, শৈলেনের হাত ধরে আরও এগিয়েছে বাতায়নিক। নাগেরবাজার, বারাসত ও বনগাঁয় তৈরি হয়েছে তার শাখা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ ০০:৪৫
শ্রীকান্ত আচার্যকে সম্বর্ধনা বাতায়নিকের তরফ থেকে।—নিজস্ব চিত্র।

শ্রীকান্ত আচার্যকে সম্বর্ধনা বাতায়নিকের তরফ থেকে।—নিজস্ব চিত্র।

১৯৭২ সালের পয়লা বৈশাখ পথচলা শুরু করে ‘বাতায়নিক’। প্রতিষ্ঠাতা চিকিৎসক শৈলেন দাস। জন্মলগ্ন থেকেই শৈলেন সংস্থাটিকে নিছক সঙ্গীতশিক্ষার স্কুল নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র হিসেবেই গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। এই কর্মযজ্ঞে পাশে ছিলেন স্ত্রী কানন দাস। রবীন্দ্রনাথের গানকে সঙ্গী করেই দমদমের বুকে পথ চলা শুরু করেছিল বাতায়নিক। আগামী প্রজন্মকে সুস্থ স্বাভাবিক সংস্কৃতিপূর্ণ সমাজ উপহার দেওয়ার লক্ষ্যেই শুরু হয়েছিল তার পথ চলা।

Advertisement

সময় যত এগিয়েছে, শৈলেনের হাত ধরে আরও এগিয়েছে বাতায়নিক। নাগেরবাজার, বারাসত ও বনগাঁয় তৈরি হয়েছে তার শাখা। বাতায়নিক মানুষের মনে উজ্জ্বল থাকবে অসামান্য কিছু প্রযোজনার জন্য। ১৯৮৫ সালে বাতায়নিকের প্রযোজনায় রূপ পায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের ক্রমবিকাশ ‘গীতি আলেখ্য’। একই বছরে মঞ্চে অভিনীত হয় ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্য। পরিচালনায় ছিলেন অলকানন্দা রায় এবং শান্তি বসু। ওই বছরই মঞ্চস্থ হয় ‘বাল্মীকি প্রতিভা’। এই নৃত্য আলেখ্য পরিচালনায় ছিলেন রামগোপাল ভট্টাচার্য। ১৯৯১ সালে প্রযোজিত হয় ‘বিশ্বতানের সন্ধানে’, ১৯৯৮ সালে ‘বাঁধন আছে প্রাণে প্রাণে’ শীর্ষক গীতি আলেখ্য। বিশ্বভারতীর মঞ্চেও সঙ্গীত পরিবেশনের সুযোগ পেয়েছে বাতায়নিক।

সঙ্গীত পরিবেশনে শিল্পীরা। —নিজস্ব চিত্র।

সঙ্গীত পরিবেশনে শিল্পীরা। —নিজস্ব চিত্র।

২০০১ সালের ১৩ অগস্ট শৈলেনের আকস্মিক প্রয়াণ। বাতায়নিককে পুনরায় ছন্দে ফিরিয়ে আনেন শৈলেনের চিকিৎসক পুত্র অনন্যব্রত দাস। সহযোগিতা করেন তৃপ্তি দাস, চিকিৎসক দেবলীনা ব্রহ্ম, সমীর দে, স্বপন ঘোষ প্রমুখেরা। ২০১৮ সালে উদ্বোধন হয় বাতায়নিকের নিজস্ব মঞ্চ শৈলেন দাস ভবনের। উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শুধু সঙ্গীতশিক্ষার পীঠস্থান নয়, তার সঙ্গে সামাজিক দায়িত্ব পালনেও বাতায়নিক একনিষ্ঠ। বস্ত্রবিতরণ, মেডিক্যাল ক্যাম্পের মতো সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে বাতায়নিক আজও দমদম অঞ্চলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

বাতায়নিক ফেলে এসেছে ৫০ বছরের সুদীর্ঘ সোনালি পথ। গত বছর থেকেই শুরু হয়েছে সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষের আয়োজন। তিনটি পর্যায়ে আয়োজিত হয়েছে এই অনুষ্ঠান। প্রথম পর্যায়ে, প্রাণের কবি বাউল রবি শীর্ষক গীতি আলেখ্য, সঙ্গীত ও বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। দ্বিতীয় পর্যায়ে, বাংলা গানের ক্রমবিবর্তন বিষয়ক একটি মনোজ্ঞ আলোচনার অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়েছিল। অনুষ্ঠানগুলির নেপথ্যে ছিলেন বাতায়নিকের ছাত্রছাত্রীরা। ২০২৪ এর গত ১৬ জুন ৫০ বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দমদম মিউনিসিপ্যাল টাউন হলে আয়োজিত হল সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন উৎসবের। অংশগ্রহণ করে চারটি সংস্থা— বাতায়নিক, মঞ্জিস, দমদম সাঁঝবাতি, বাতায়নিক বনগাঁ শাখা। মঞ্চ আলো করে সে দিন শ্রোতাদের সুমধুর কণ্ঠে সঙ্গীত ও কবিতা উপহার দেন শ্রীকান্ত আচার্য, পূবালী দেবনাথ, দেবারতি সোম, স্বপন সোম, সুমন পান্থি, স্বরূপ পাল, পরাগবরন, বাচিকশিল্পী প্রবীর ব্রহ্মচারী প্রমুখ। ছিলেন দেবশ্রী বিশ্বাস, স্বাতী পাল, সুদেষ্ণা রুদ্র, সুমন্ত বসু, পুলক সরকারের মতো প্রমুখ শিল্পীরাও। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন দেবাশিস বসু ও দোয়েল সাহা।

Advertisement
আরও পড়ুন