—প্রতীকী চিত্র।
কেন্দ্রের নির্দেশ মতো ভর্তুকিযোগ্য রান্নার গ্যাসের গ্রাহকদের (উজ্জ্বলা ও সাধারণ) বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ, চোখের মণি বা মুখের ছবি) নিখরচায় যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত মাসে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বণ্টনকারী তথা বিক্রেতারা (ডিস্ট্রিবিউটর) ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা করার কথা গ্রাহকদের বললেও, এখনও বহু জনেরই তা হয়নি। ফলে প্রশ্ন উঠছে, তাঁদের কী হবে? কোনও বার্তা সরকারি ভাবে দেওয়া না হলেও, রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি ও বিক্রেতা মহল সূত্রের খবর, নতুন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ওই প্রক্রিয়া চলবে। গ্যাসের সংযোগ বা ভর্তুকি বন্ধও হবে না। এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই।
গত ১৮ অক্টোবর তেল ও গ্যাস মন্ত্রক ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম ও হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়ামকে চিঠিতে ওই নির্দেশের কথা জানায়। যেখানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উজ্জ্বলা যোজনা-সহ ভর্তুকিযোগ্য সব গ্রাহকেরই বায়োমেট্রিক তথ্যের মাধ্যমে আধার যাচাইয়ের কথা বলা হয়। তবে নির্দিষ্ট দিন বলা হয়নি।
শনিবার তিনটি তেল সংস্থার সূত্র জানিয়েছে, এ দিন পর্যন্ত মন্ত্রক থেকে আর কোনও নির্দেশ আসেনি। ফলে ওই প্রক্রিয়া চলবে। সংযোগ বা ভর্তুকি বন্ধের কথাও কখনওই নির্দেশে বলা হয়নি। ইন্ডেন ও হিন্দুস্তান গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটরদের সংগঠনের অন্যতম কর্তা বিজন বিশ্বাস ও সঞ্জয় আগরওয়াল জানান, ওই প্রক্রিয়া ৩১ ডিসেম্বরের পরে বন্ধ হবে, এমন নির্দেশ এখনও পাননি।
ভারত গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটর সংগঠনের কর্তা সুকোমল সেনের অবশ্য দাবি, এর পরেও ওই প্রক্রিয়া চালু থাকার কথা গ্রাহকদের জানানোর জন্য সংস্থা তাঁদের অভ্যন্তরীণ বার্তা পাঠিয়েছে। তাঁরা সেই মতো দোকানে নোটিস দেবেন এবং ডেলিভারি বয়রাও গ্রাহকদের জানাবেন। চাইলে গ্রাহক ‘হ্যালো বিপিসিএল অ্যাপ’ মারফত ঘরে বসেও তা করতে পারবেন। প্রসঙ্গত, ইন্ডেনের গ্রাহকেরাও ‘ইন্ডিয়ানঅয়েল ওয়ান মোবাইল অ্যাপ’ দিয়ে নিজেরাই তা সারতে পারেন।যদিও গ্রাহক মহলের বক্তব্য, তা হলে ৩১ ডিসেম্বরের কথা কেন বলা হয়েছিল? বণ্টনকারীদের দাবি, ওই সময়সীমার কথা তাঁদের তেল সংস্থাগুলি অভ্যন্তরীণ বার্তায় জানিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অবশ্য মত, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই কাজ সারতে চায় সরকার।তবে এই প্রক্রিয়ায় জন্য কিছু ক্ষেত্রে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিশেষত ডেলিভারি বয়রা বাড়িতে প্রবীণদের পরিষেবা দিলে টাকা চাইছে বলেও অভিযোগ। সংস্থাগুলি স্পষ্ট জানিয়েছে, পুরোটাই নিখরচায় হওয়ার কথা। টাকা চাওয়া বেআইনি। এমন হলে অভিযোগ জানাতে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পশ্চিম বর্ধমানের উখড়ায় এই প্রক্রিয়ার জন্য ৪০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান কিছু গ্রাহক। পুলিশ সংশ্লিষ্ট বণ্টনকারী ও তাঁর এক কর্মীকে আটক করে। বণ্টনকারী দাবি করেন, একটি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে অস্থায়ী শিবির করা হয়। সেই গোষ্ঠীর সদস্যেরা টাকা নিয়ে থাকতে পারেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরে গ্রাহকদের থেকে নেওয়া টাকা ফেরানোয় আটকদের ছেড়ে দেওয়া হয়।