mathurapur

পঞ্চায়েতে শাসক-বিরোধী টানাপড়েন, ‘স্তব্ধ’ উন্নয়ন

বিরোধী ১১ জন জয়ী সদস্য মিলে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করেন। প্রধান নির্বাচিত হন কংগ্রেসের জয়ী সদস্য উত্তরা গায়েন এবং উপপ্রধান হন নির্দল প্রার্থী প্রহ্লাদ হালদার।

Advertisement
সৈকত ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রধান এবং উপপ্রধান নিয়মিত পঞ্চায়েতে না আসায় সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, এমনই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মথুরাপুর ১ ব্লকের লক্ষ্মীনারায়ণপুর উত্তর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যেরা। পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘প্রভাব খাটিয়ে’ কাজ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ বিরোধী সদস্যেরা।

Advertisement

লক্ষ্মীনারায়ণপুর উত্তর পঞ্চায়েতে ১৯টি আসন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ৮টি, বিজেপি ৫টি, সিপিএম ৩টি, নির্দল ২টি এবং কংগ্রেস একটি আসনে জয়লাভ করে। বিরোধী ১১ জন জয়ী সদস্য মিলে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করেন। প্রধান নির্বাচিত হন কংগ্রেসের জয়ী সদস্য উত্তরা গায়েন এবং উপপ্রধান হন নির্দল প্রার্থী প্রহ্লাদ হালদার।

অভিযোগ, বোর্ড গঠনের পর থেকেই কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে পঞ্চায়েত। তৃণমূল সদস্যদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধানের দেখা মেলে না। দীর্ঘ দিন না আসায় বিভিন্ন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। তৃণমূলের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য ঝুমা মণ্ডল বলেন, “ওদের কাজ করার কোনও ইচ্ছে নেই। প্রধান, উপপ্রধানকে পঞ্চায়েতে দেখাই যায় না। বিভিন্ন প্রয়োজনে পঞ্চায়েতে এসেও সাধারণ মানুষকে ফিরে যেতে হয়। গোটা এলাকাতেই উন্নয়ন স্তব্ধ। আমরা চাই, অবিলম্বে প্রধান-উপপ্রধান পদত্যাগ করুক। নতুন বোর্ড তৈরি হোক। সরকারি সুবিধা থেকে মানুষ যাতে বঞ্চিত না হন, সেটাই আমরা চাইছি।”

তৃণমূলের মথুরাপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মানবেন্দ্র হালদার বলেন, “বিরোধীদের কাজ করার সদিচ্ছা নেই। সাধারণ মানুষ পরিষেবা না পেয়ে আমাদের বার বার অভিযোগ জানাচ্ছেন। প্রধান, উপপ্রধানকে একাধিক বার ডেকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দেখা করেননি। আসলে ওঁরা মানুষের কাজ করতে চান না। বিজেপি, সিপিএম-সহ বিরোধীরা জোট বেঁধে শুধু রাজনীতি করছে। মানুষের জন্য কাজ করছে না।”

অভিযোগ উড়িয়ে উপপ্রধান প্রহ্লাদ হালদার বলেন, “সময় মতোই প্রধান-উপপ্রধান পঞ্চায়েতে যান। বিরোধীরা পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করায় প্রভাব খাটিয়ে কাজ করতে দিচ্ছে না তৃণমূল। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেছি আমরা। কিন্তু উপসমিতি গঠনের সময়ে আমাদের এক সদস্য অনুপস্থিত থাকায় তৃণমূল সদস্যদের উপসমিতিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ বৈঠকে কোনও কাজ করার সিদ্ধান্ত হওয়া হলে, আর্থিক বৈঠকে তা আটকে দেওয়া হচ্ছে। কাজ করতে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে আমাদের এক সঞ্চালক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।” বিজেপি নেতা অশোক পুরকাইত বলেন, “বিরোধীরা পঞ্চায়েত গড়েছে, তা সহ্য করতে পারছে না তৃণমূল। তাই জোর খাটিয়ে পঞ্চায়েতকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মানুষের উন্নয়ন আটকে দিয়ে নাটক করছে ওরা।”

মথুরাপুর ১ বিডিও সোমনাথ মান্না বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে রয়েছে৷ ইতিমধ্যেই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধান, উপপ্রধান-সহ পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বার পাঁচেক বৈঠক হয়েছে। তারপরেও পঞ্চায়েতের কোনও কাজ এগোয়নি। সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি৷’’

Advertisement
আরও পড়ুন