Teacher Crisis

টিটাগড়ের ওড়িয়া মাধ্যম স্কুলে স্থায়ী শিক্ষকের সংখ্যা দু’জন, মুখ ফেরাচ্ছে পড়ুয়ারাও

পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে পড়ে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলটি ওড়িয়া মাধ্যমে চলে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি।

Advertisement
আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩০
An image of students

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা তিনশোরও বেশি। কিন্তু স্থায়ী শিক্ষক মাত্র দু’জন। যেখানে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় বেশির ভাগ স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা হাতে গোনা এবং শিক্ষকের সংখ্যা বেশি, সেখানে সরকার পোষিত টিটাগড়ের ওড়িয়া মাধ্যম স্কুল টিটাগড় উপেন্দ্র ভঞ্জ বিদ্যাপীঠের ছবিটা উল্টো।

Advertisement

স্কুলের প্রধান শিক্ষক শক্তিদেব মিশ্র বলেন, ‘‘সরকার অনুমোদিত শিক্ষক পদ ২২টি। দু’টি করণিক পদ ও চারটি চতুর্থ শ্রেণির পদ রয়েছে। সেখানে এখন সরকার অনুমোদিত স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন ২ জন, ২ জন পার্শ্ব-শিক্ষক, এক জন করে করণিক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী আছেন। খুব কম বেতনে আংশিক সময়ের অস্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন ৭ জন। এত কম শিক্ষক নিয়ে কী ভাবে স্কুল চলবে? অথচ এই এলাকায় প্রচুর ওড়িয়া ভাষাভাষী মানুষ থাকায় ছাত্র আসে বরাবরই। শিক্ষা দফতরে স্থায়ী শিক্ষকের জন্য আবেদন করেছি।’’

পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে পড়ে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলটি ওড়িয়া মাধ্যমে চলে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি। প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, এই স্কুলের পথ চলা শুরু ১৯৫৩ সালের জানুয়ারিতে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন চটকলে কাজের জন্য ১৯৪২ সালের পরে অন্য প্রদেশের প্রচুর মানুষ আসেন। তাঁদের মধ্যে ওড়িয়াভাষীও ছিলেন প্রচুর। তাঁদের ছেলেমেয়েদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দেওয়ার চাহিদা থেকেই তৈরি হয় ওই স্কুল। তখন সেখানে শিক্ষকও ছিল পর্যাপ্ত। শক্তিদেব বলেন, ‘‘এখনও প্রচুর ওড়িয়াভাষী মানুষ চান, ছেলেমেয়েরা মাতৃভাষায় পড়ুক। ২০১০ সালেও এখানে পড়ুয়া-সংখ্যা ছিল এক হাজারের মতো। ২০০৩ সালের পর থেকে শিক্ষকেরা অবসর নেওয়ার পরে আর নতুন নিয়োগ হয়নি। তাই পড়ুয়ারাও মুখ ফেরাচ্ছে।’’

অথচ স্কুলে অন্য পরিকাঠামোর তেমন ঘাটতি নেই বলেই প্রধান শিক্ষকের দাবি। তিনি জানান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষাগার রয়েছে। ২০২১ সালে কম্পিউটার ল্যাব তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যারাকপুর শিক্ষা জেলার জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডি. আই. মাধ্যমিক শিক্ষা) ও শিক্ষা দফতরের স্কুল শিক্ষা কমিশনারকে চিঠি লিখে জানিয়েছি।’’ শিক্ষা দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানান, ওড়িয়া-সহ বিভিন্ন ভাষাভাষী স্কুলগুলির শূন্যপদ ভরানোর প্রক্রিয়া চলছে। অনেক ক্ষেত্রে শূন্যপদ সংরক্ষিত আসন হওয়ায় উপযুক্ত প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন
Advertisement