নওশাদও জেল থেকে বেরিয়ে জানিয়ে দেন মাঠ তিনি ছাড়বেন না। লড়াই হবে রাজনৈতিক ভাবে। —ফাইল চিত্র।
৪১ দিন জেলে থাকার পর ছাড়া পেয়েছেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে শাসকদলকে নিশানা করেছিলেন। সেই আইএসএফ বিধায়কের বাড়িতে রবিবার দেখা করতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। কিন্তু দেখা হল না। ফুরফুরা থেকে নওশাদের দেখা না পেয়ে ফিরে গেলেন জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস। বললেন, ‘‘পরে দেখা হবে নিশ্চয়ই।’’
গত ২১ জানুয়ারি পুলিশের সঙ্গে আইএসএফের সংঘর্ষের অভিযোগে গ্রেফতার হন নওশাদ-সহ বেশ কয়েক জন নেতা। জামিনে মুক্তির পর শনিবার ফুরফুরার বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। তার মধ্যেই নওশাদের কেন্দ্র ভাঙড়ে আবার বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনার খবর মিলেছে। অন্য দিকে, ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামের একটি মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তিনি দলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘মাঠে নামতে হবে। খেলতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাবে আর নওশাদ সিদ্দিকিকে ভোট দেবে, আমরা তা হতে দেব না।’’ আবার নওশাদও জেল থেকে বেরিয়ে জানিয়ে দেন মাঠ তিনি ছাড়বেন না। লড়াই হবে রাজনৈতিক ভাবে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার বিকালে নওশাদের সঙ্গে দেখা করতে যান জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক। জানান, নওশাদ মুক্তি পাওয়ায় তিনি খুশি। তাঁর বিধানসভা এলাকার একজন পীরজাদা নওশাদ। সোমবার থেকে ফুরফুরায় ইসালে সওয়াব উৎসব। লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলমান তীর্থক্ষেত্র ফুরফুরায়।
কিন্তু নওশাদের বাড়িতে গিয়েও তাঁর দেখা না পেয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘ইসালে সওয়াবের সময় ফুরফুরায় যত পীর এবং পীরজাদা আছেন, তাদের সবার সঙ্গে দেখা করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ফুরফুরার রাস্তাঘাট, পানীয় জল, আলোর সুব্যবস্থা করেছেন। আমরা চেষ্টা করছি সরকারি সুবিধা যেন এখানকার সব মানুষ পান। নওশাদের সঙ্গে দেখা করতে এলাম। কিন্তু ও নেই। ওঁকে ফোনেও পাচ্ছি না। কারণ ফোনটা ওঁর কাছে নেই। পরে আবার আসব।’’
অন্য দিকে, নওশাদ পরে জানান, ফুরফুরা দরবার শরিফে ভক্ত বা অতিথি হয়ে অনেকেই আসেন। আর স্নেহাশিস চক্রবর্তী তো এলাকার বিধায়ক। তিনি আগেও এসেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজনই ফুরফুরার দরবারে আসেন। তবে তিনি জেনেশুনেই রাজ্যের মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেননি কি না, তা স্পষ্ট করেননি নওশাদ।
আইএসএফ বিধায়কের গ্রেফতারে শাসক-বিরোধী তরজা হয়েছে বিস্তর। আইএসএফ-সহ বিরোধী রাজনীতি দলের অভিযোগ ছিল অন্যায় ভাবে বিরোধী দলের এক জন বিধায়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তা হলে মন্ত্রীর এই দেখা করতে আসা কি ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলের’ চেষ্টা হিসাবে দেখছেন? নওশাদের জবাব, ‘‘সেটা শাসকদলই বলতে পারবে। তবে যে-ই দেখা করতে আসুন। আমার লড়াই জারি থাকবে।’’