ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার খরচ এসেছিল গ্রামবাসীদের দেওয়া চাঁদা থেকে। সেই চাঁদার পরিমাণ ছিল ৭০ ডলার, যার এখনকার মূল্যে ৬০ হাজার টাকার কাছাকাছি। সেই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ গ্রামবাসীদের মধ্যে যাঁদের বয়স ৬০ বছরের বেশি, তাঁদের ১ লক্ষ টাকা করে অর্থসাহায্য করেন চিনা ধনকুবের রিচার্ড লিউ কিয়াংডং। ৫০ বছর বয়সি এই ব্যবসায়ী দেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান। গত বছরের এপ্রিলে প্রকাশিত ‘হুরুন গ্লোবাল রিচ লিস্ট’ অনুসারে, লিউ-এর মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৮ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় তাঁর নাম ৪২৭ নম্বর স্থানে।
জিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ানের গুয়াংমিং গ্রামের বাসিন্দা লিউয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল অর্থের অভাবে। ১৯৯০ সালে তাঁর পড়ার খরচের জন্য গ্রামের বাসিন্দারা অর্থ সংগ্রহ করে ৭০ ডলার ও ৭৬ টি ডিম তাঁর হাতে তুলে দেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি বেজিংয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তার পর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি লিউকে। দেশের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
২০১৬ সালে নিজের গ্রামে ফিরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, যাঁরা তাঁকে পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তাঁদের সেই ঋণ শোধ করবেন। সেই বছর থেকে বয়স্ক গ্রামবাসীদের ১০ হাজার ইউয়ানের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১লক্ষ টাকা) পাশাপাশি, প্রতিটি পরিবারকে খাদ্য, পোশাক ও নানা উপহারও পাঠিয়েছিলেন লিউ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে গ্রামে আসার সম্ভাবনা রয়েছে লিউয়ের, এমনটাই খবর।
গ্রামে ১ হাজার ৪০০ পরিবার রয়েছে। সেই সব পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের পরিচয়পত্র সংগ্রহের কাজ চলছে। লিউ গ্রামে এসে যাতে তাঁদের হাতে উপহার তুলে দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা আগেভাগেই সেরে রাখছেন গ্রামের বাসিন্দারা। এক গ্রামবাসী সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘লিউ গত বছর উপহার সমেত আমাদের গ্রামে এসেছিলেন। তিনি আমাদের মনে রেখেছেন এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’’ অন্য এক জন জানান, গ্রামে অনেক পরিবার রয়েছে। তাঁর অবদান গ্রামের সকলে আগামী কয়েক দশক মনে রাখবে গ্রামের সকল পরিবার। লিউয়ের উপহার দেওয়ার সংবাদটি চিনের সমাজমাধ্যমে প্রশংসা অর্জন করেছে।