ছবি: সংগৃহীত।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির উন্নতি ঘটেছে। আর সেই প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে যে বিষয়গুলির চাহিদা বাজারে রীতিমতো বেড়ে গিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স (এআই) তার মধ্যে অন্যতম। স্বাস্থ্যক্ষেত্র, শিক্ষা থেকে শুরু করে ব্যবসা ও অটোমোবাইল পর্যন্ত সমস্ত ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। নানা ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার মানুষের জীবনকেও তাই আগের চেয়ে অনেক সহজ করে তুলেছে। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের কাছে উদ্বেগের কারণও হয়ে উঠছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য মেট্রো’র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে ‘যোগাযোগের’ নতুন নতুন উপায় খুঁজে বার করার চেষ্টা করছেন গবেষক এবং প্রযুক্তিবিদরা। আর তা নিয়েই বৃদ্ধি পাচ্ছে উদ্বেগ।
প্রযুক্তির মাধ্যমে অশরীরীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার চেষ্টা নতুন নয়। বিখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস এডিসনও প্রেতাত্মার সঙ্গে কথা বলার জন্য ‘স্পিরিট ফোন’ তৈরির কথা ভেবেছিলেন। এ বার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে প্রেতলোকের সঙ্গে ‘সংযোগের’ চেষ্টা চালাচ্ছেন একদল গবেষক। চেষ্টা চালাচ্ছেন কিছু সাধারণ মানুষও। তেমনই এক জন হলেন নিউ ইয়র্কের ক্রিস্টি অ্যাঞ্জেল। তাঁর দাবি, ‘প্রজেক্ট ডিসেম্বর’ নামের একটি এআই পরিষেবার মাধ্যমে মৃত বন্ধু ক্যামেরুনের সঙ্গে চ্যাট করছেন তিনি। অতিমারির সময় মৃত্যু হয়েছিল ক্যামেরুনের। সেই মৃত বন্ধুর সঙ্গেই নাকি ‘যোগাযোগ’ রাখতে এবং বন্ধুকে স্মৃতিতে রেখে দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সিদ্ধান্ত নেন ক্রিস্টি। মাত্র ১০ ডলারের বিনিময়ে ‘প্রজেক্ট ডিসেম্বর’-এর পরিষেবা পাওয়া যায়। মৃত ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য ওই এআই-এর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেই, ব্যস! সেই তথ্য দিয়েই ওই মৃত ব্যক্তির মতো করে চ্যাট করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
ক্রিস্টির এই কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই ‘ইটারনাল ইউ’ বলে একটি তথ্যচিত্র তৈরি হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, কী ভাবে ক্রিস্টির সঙ্গে ক্যামেরুনরূপী এআই-এর কথোপকথন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এমনকি, চ্যাটের মধ্যে ক্রিস্টির উপর ভর করার কথাও বলেছে কৃত্রিম মেধা দিয়ে তৈরি ক্যামেরুনের ‘আত্মা’। যার প্রভাব পড়েছে ক্রিস্টির উপর। আর তা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মানসিক শান্তি বজায় রাখতে এআইকে এ ভাবে ব্যবহার না করার পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।