ছবি: সংগৃহীত
শীতের ছুটিতে নতুন কোথাও বেড়াতে যেতে চান? গন্তব্য হতে পারে ডুয়ার্স মোরাঘাটের সবুজ জঙ্গলে ঘেরা মেলা বস্তি। ইতিমধ্যেই সেখানে আটটি ‘হোমস্টে’ চালু হয়েছে। এক অসাধারণ পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত এই হোমস্টেগুলি, তিন পাস জঙ্গলঘেরা একপাশে চা-বাগান। তার মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে নদী।সারাদিন দেশি-বিদেশি পাখির কোলাহল কলতান, যা মুগ্ধ করবে পর্যটকদের। আর তাতেই পর্যটকদের যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে সেকথা বলাই যায়।
করোনার অতিমারির কারণে কিন্তু পর্যটকরা দীর্ঘদিন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বিভিন্ন রিসোর্ট ও পর্যটক কেন্দ্রগুলি থেকে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে ডুয়ার্স। আর মানুষ দীর্ঘদিন ঘরবন্ধি থাকার পর ধীরে ধীরে এখন একটু খোলামেলা পরিবেশে বিশুদ্ধ বাতাস নিতে এবং আনন্দ উপভোগ করতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়তে শুরু করেছেন। তবে করোনাবিধি কিন্তু সব রকম ভাবে স্মরণে রেখেই তাঁরা ঘুরতে বেরোচ্ছেন। আর তাই মানুষের ভিড় থেকে কিছুটা দূরে খোলামেলা জায়গা হিসেবে হোমস্টেগুলিকেই পছন্দের তালিকায় প্রথমে রাখছেন পর্যটকরা।
সেই কারণে মোরাঘাট জঙ্গলের মাঝে রাভা মেলা বস্তির হোমস্টেগুলি পর্যটকদের আকর্ষিত করবে এমনটাই আশা করছেন হোমস্টে-র মালিকরা। কারণ ভিড় ছেড়ে কিছুটা নিরিবিলিতে রাত্রিযাপন করতে চান পর্যটকরা।তাই মেলা বস্তিতে তৈরি হওয়া এই হোমস্টে স্বাভাবিক ভাবেই পর্যটকদের টানবে।
কোথায় অবস্থিত এই হোমস্টে?
ডুয়ার্সের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বুকে রাজ্য সড়ক ধরে গয়েরকাটা থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত খট্টিমারি বিট অফিসের বাঁ দিক দিয়ে মেঠো পথ ধরে কিছুটা পথ এগোলেই এই হোম স্টেগুলি।যেখানে খুব সহজেই দেখা মিলতে পারে হাতি, চিতা, বাইসন, হরিণের মতো তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পরিযায়ী পাখি,ময়ূর, বনমুরগি তো দেখতে পাবেনই।
এতদিন ডুয়ার্সে আসা পর্যটকদের ঘুরতে যেতে হত গরুমারা, বক্সা , জলদাপাড়া, নেওড়াভ্যালি,মূর্তি,অথবা লাভা, লোলেগাঁও, চাপড়ামারিতে। তবে রয়েছে চা বাগান আর ঘন জঙ্গল ঘেরা এক চিলতে এলাকা পিছিয়ে পরা জনজাতিদের নিয়ে গঠিত রাভা বনবস্তিও।সেখানেই থাকার ব্যবস্থা হয়েছে এখন। ইতিমধ্যেই পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন।পাশেই রয়েছে গোসাইহাট ইকোপার্ক পক্ষীরালয় কেন্দ্র,যা দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ। তবে দেশি-বিদেশি পাখিরা আশা কিন্তু বন্ধ করেনি।শীত পড়তেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে দেশি-বিদেশি পরিযায়ী পাখির দল।
এই নতুন পর্যটন গন্তব্য প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার পর্যটন আধিকারিক রিচার্ড লেপচা বললেন, ‘‘রাভা জনজাতির মানুষের যেখানে বসবাস সেখানে পর্যটন শিল্প বিকাশের প্রয়োজনীয় রসদ রয়েছে। তাই জেলায় পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও রাভ সংস্কৃতিকে তুলে ধরারজন্য হোমস্টেগুলি নির্মানের অনুমোদন ও আর্থিক ভাবে সাহায্য করা হয়েছে।’’
থাকার খরচ
মাথা পিছু ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। (খাবার-দাবার সহ, জানিয়েছেন কর্নধাররা)।