Puja Travel

৩ জায়গা: ৫ হাজার টাকা পকেটে নিয়েই পুজোয় ঘুরে আসতে পারেন অনায়াসে

পকেটের ভার না বাড়িয়ে পুজোয় ৫ হাজার টাকার মধ্যেও কিন্তু ঘুরে আসা সম্ভব। রইল তেমন কয়েকটি জায়গার খোঁজ। যাতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতে পারেন।

Advertisement
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৩ ১৮:২২
Symbolic Image.

কম খরচে পুজোয় ঘুরে আসুন। ছবি:সংগৃহীত।

পুজোর ঢাকে কাঠি পড়তে এখনও বাকি কিছু দিন। সারা বছর ধরে এই সময়টার জন্য অপেক্ষার প্রহর গোনে বাঙালি। পুজো মানেই হইহুল্লোড়, নতুন জামার গন্ধ, জমিয়ে খাওয়াদাওয়া আর লম্বা ছুটি। অনেকেই আবার উৎসবের শহর ছেড়ে পুজোর চারটি দিন পাড়ি দেন অন্য কোনওখানে। আলোর রোশনাই আর হইহুল্লোড়ের চেয়ে নির্জনতা খুঁজে নিতে চান। পুজোয় কেনাকাটারও একটা বিষয় থাকে। ফলে পকেটের ভার না বাড়িয়ে কাছেপিঠেও বেড়িয়ে আসা যায়। তবে পুজোর সময় বেড়াতে যাব বললেই চলে যাওয়া যায় না। পরিকল্পনা করতে হয় বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই। হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে ট্রেনের টিকিট, সবেতেই লম্বা লাইন পড়ে। আগে থেকে সব ব্যবস্থা রাখলে করে না রাখলে মুশকিলে পড়তে হয়। পকেটের ভার না বাড়িয়ে ৫০০০ টাকার মধ্যেও কিন্তু ঘুরে আসা সম্ভব। রইল তেমন কয়েকটি জায়গার খোঁজ। যাতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতে পারেন।

Advertisement

দার্জিলিং

অক্টোবরের শেষ দিকে পুজো। বাতাসে বর্ষা আর শীতের যৌথ আবহাওয়া থাকলেও গরম যে কমবে না, তা বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে। তাই উত্তুরের হাওয়া গায়ে মাখতে যেতে পারেন দার্জিলিং। বাঙালির অন্যতম পছন্দের জায়গা। বার বার গিয়েও পুরনো হয় না যেন। পুজোর চারটি দিন টাইগার হিল, বাতাসিয়া লুপ, কাঞ্চনজঙ্ঘা, মল রোড, পাহাড়ি রাস্তা আর চা বাগানে ঘুরে মন্দ কাটবে না।

পুজোয় দার্জিলিং হতে পারে গন্তব্য।

পুজোয় দার্জিলিং হতে পারে গন্তব্য। ছবি: সংগূহীত।

কী ভাবে যাবেন?

দার্জিলিং মেল, উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস, কামরূপ এক্সপ্রেস, কাঞ্চনকন্যা, শতাব্দী এক্সপ্রেস, তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস— শিয়ালদহ থেকে দার্জিলিং যাওয়ার প্রচুর ট্রেন রয়েছে। ব্যাগপত্তর গুছিয়ে কোনও এক দিন স্লিপার কোচে উঠে পড়লেই হল। টিকিটের দাম ৩৬০ টাকার আশপাশে। তবে যাওয়ার দু’দিন আগে কাটলে হবে না। দার্জিলিং যাওয়ার ট্রেন সাধারণত রাতেই থাকে। পরের দিন সকালে ট্রেন পৌঁছবে নিউ জলপাইগুড়ি। সেখান থেকে গাড়ি করে সোজা দার্জিলিং। গাড়িতে মাথাপিছু ভাড়া ২৫০ টাকা।

কোথায় থাকবেন?

দার্জিলিং-এ প্রচুর হোম স্টে রয়েছে, আছে হোটেলও। নানা রকম ভাড়ার হয়। এ ছাড়াও কিছু হস্টেল আছে। সেগুলির ভাড়া আরওই কম। একা যাচ্ছেন, না কি দলে, তা বুঝে থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে পারেন। একটু পরিকল্পনা করে গেলে অনায়াসে মাথাপিছু ৫ হাজার টাকার মধ্যে দিন দুয়েকের দার্জিলিং ভ্রমণ সেরে আসা যায়।

ঘাটশিলা

কলকাতার অনতিদূরে কয়েক দিনের ছুটির ঠিকানা হতেই পারে ঘাটশিলা। সুর্বণরেখা নদীর হাওয়ায় ধুয়ে যাবে সারা বছরের ক্লান্তি। ঘাটশিলার জনজীবন, নদীর চোরা স্রোত, পাহাড় আর জঙ্গলে মিশে পুজোর দিনগুলি দিব্যি কেটে যাবে। এমনিতে সারা বছরই মানুষের আনাগোনা লেগে থাকে এখানে। তবে পুজোর সময়ে ফাঁকা পেলেও পেতে পারেন। একটা বছর রাত জেগে ঠাকুর না দেখে বরং ফুলডুংরি টিলা, ধারাগিরির ঝরনা, বুরুডি লেক, পঞ্চপাণ্ডব পাহাড়, রাতমোহনা, গালুডিহি ব্যারেজ দেখতেই পারেন।

কী ভাবে যাবেন ঘাটশিলা?

পুজোয় যেতে পারেন ঘাটশিলায়।

পুজোয় যেতে পারেন ঘাটশিলায়। ছবি: সংগৃহীত।

হাওড়া থেকে ঘাটশিলার উদ্দেশে জনশতাব্দী এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে। এ ছাড়াও রয়েছে হাওড়া ইস্পাত এক্সপ্রেস, স্টিল এক্সপ্রেস, টাটানগর ফেস্টিভ্যাল স্পেশ্যাল। ঘাটশিলা যাওয়ার ট্রেনের ভাড়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। ঘাটশিলা স্টেশনে নেমে বেশ কিছু অটো এবং গাড়ি আছে। সেগুলির কোনও একটি ভাড়া করে নিলে সারা দিনের জন্য নিশ্চিন্ত। ঘাটশিলার দর্শনীয় স্থানগুলি গাড়ি করেই দেখে নিতে পারবেন। গাড়ির কোনও নির্দিষ্ট ভাড়া নেই। তবে আগে থেকে বুক করে গেলে সুবিধা হবে। গুগলে ঘেঁটে ঘাটশিলার অটো কিংবা গাড়ির ড্রাইভারের ফোন নম্বর পেয়ে যাবেন।

কোথায় থাকবেন?

সকাল ১০টার মধ্যে ঘাটশিলা পৌঁছে গেলে সে দিনই সন্ধ্যার ট্রেন ধরে রাতে ফিরে আসতে পারেন। সে ক্ষেত্রে থাকার জন্য আলাদা খরচ হবে না। শুধু খাওয়ার খরচ। তবে অনেকেই এত ধকল নিতে চান না। ধীরেসুস্থে নতুন জায়গায় কয়েক দিন কাটিয়ে আসতে চান। সে ক্ষেত্রে কিন্তু ঘাটশিলায় বেশ কিছু বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। সেগুলিরও কোনও একটিতে থাকতে পারেন। হোম স্টেগুলির প্রতি রাতের ভাড়া পড়বে খাওয়াদাওয়া-সহ ১০০০-১২০০ টাকা। দু’দিন থাকলেও সব মিলিয়ে ৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হবে না।

বকখালি

ইট-পাথরের নগরে যদি পুজোর সময় মন না বসে, তা হলে যেতে পারেন সাগরে। পুজোর দিনগুলি বকখালির আনাচকানাচ চষে ফেলতে পারেন। সমুদ্রের উত্তাল হাওয়া আর শরতের সোনা মেঘ আপনার ভ্রমণসঙ্গী হবে। রাত হলেই বকখালির সমুদ্রসৈকত জ্যোৎস্নার আলোয় ভেসে যায়। সৈকত লাগোয় ঝাউবন আর এক দিকে রূপনারায়ণ নদীর মোহনা— বকখালি যেন স্বপ্নের ঠিকানা। প্রিয়জনের হাতে হাত রেখে পুজোয় বকখালি ভ্রমণ একেবারে জমে যাবে।

পুজোয় যেতে পারেন বকখালি।

পুজোয় যেতে পারেন বকখালি। ছবি: সংগৃহীত।

কী ভাবে যাবেন?

কোনও এক দিন সকালে শিয়ালদহ থেকে নামখানা লোকালে চেপে যেতে হবে নামখানা স্টেশনে। তার পর সেখান থেকে টোটো কিংবা অটো করে সোজা বকখালি। শিয়ালদহ থেকে প্রায় প্রতি দিন নামখানা লোকাল ছাড়ে। ভাড়া ৪০-৪৫ টাকা। স্টেশন থেকে বকখালি যাওয়ার যে টোটো ছাড়ে, তার ভাড়াও খুব বেশি হওয়ার কথা নয়।

কোথায় থাকবে?

বকখালিতে নানা দামের হোটেল রয়েছে। দেখেশুনে, পকেট বুঝে পছন্দমতো কোনও একটি বুক করতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement