সিআইএসএফের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। ছবি: পাপন চৌধুরী।
প্রায় দেড় মাস ধরে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ সেলের কুলটি কারখানার আবাসন এলাকায়, অভিযোগ আবাসিকদের। দ্রুত জল সরবরাহের দাবিতে কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দাদের একাংশ। বুধবার এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় তৃণমূল। ছিলেন দলের জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বচসা ও ধস্তাধস্তি হয় সিআইএসএফের। পরে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। সমাধানসূত্র বার করতে এ দিনই কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আশ্বাস মিললেও কবে থেকে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, সে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
কুলটির বিস্তীর্ণ এলাকায় রয়েছে সেলের কুলটি কারখানার কয়েক হাজার আবাসন। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এই সব অঞ্চলে আসানসোল পুরসভার পানীয় জল সরবরাহের কোনও পরিকাঠামো নেই। শুরু থেকেই কারখানার তরফে থেকে জল সরবরাহ করা হয়। অভিযোগ, সেই জলও আসছে না। ফলে, পানীয় জলের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পুরসভার তরফে ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহ করা হলেও, তা অনিয়মিত বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এই পরিস্থিতিতে গত দেড় মাসে একাধিক বার বিক্ষিপ্ত ভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সুরাহা না হওয়ায় এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিক্ষোভ থামাতে আসে সিআইএসএফ। গার্ডরেল ভেঙে বিক্ষোভকারীরা গেটে হাজির হন। অভিযোগ, তাঁরা কারখানার আধিকারিকদের দিকে তেড়ে যান। কারখানায় ঢুকতে-বেরোতে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় দু’ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে বিক্ষোভ চলে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। এরই মাঝে বৈঠক হয়। তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল বলেন, “আমাদের একটাই দাবি, কারখানার আবাসন এলাকায় জল সরবরাহ করতে হবে।”
বিক্ষোভকারীরা কারখানার সিজিএম শুভাশিস সেনগুপ্তের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিকেলে। কর্তৃপক্ষের তরফে উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হয়। শুভাশিসের দাবি, “ডিভিসি থেকে পর্যাপ্ত জল পাওয়া যাচ্ছে না। যে ভাবে জল পাওয়া যাবে, সে ভাবে সরবরাহ করা হবে। সমস্যা মেটাতে নদীতে বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে।” তিনি বলেন, “বোরহোল করে সমস্যা মেটানোর প্রক্রিয়াও চলছে। দরপত্র ডাকা হয়েছে। সময় দিতে হবে।”
তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০০৩-এ কারখানার সমস্ত শ্রমিক-কর্মী স্বেচ্ছাবসর নেন। তাঁরা সমস্ত পাওনা পেয়ে আবাসন খালি করে চলে গেলেও, আবাসনগুলি ভেঙে দেওয়া হয়নি। অভিযোগ, বহিরাগতেরা সেগুলি দখল করে বাস করছেন। ২০০৮-এ কারখানার উৎপাদনপ্রক্রিয়া ফের চালু করা হলেও, কোনও স্থায়ী শ্রমিক-কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। ঠিকা প্রথায় উৎপাদন হচ্ছে। ফলে, আবাসনে শ্রমিক-কর্মীরা থাকেন না। এই অবস্থায় আবাসন এলাকায় জল দেওয়ার দায়িত্ব তাঁদের নয়, দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষের।