ঢেউখেলানো পাহাড়ের কোলে ছবির মতো জলাধার, গাড়ি নিয়েই চলে যেতে পারেন পুজোর ছুটিতে

পুজোর ছুটির জন্য ট্রেন, বাস, বিমানের টিকিট কাটা হয়নি? হতাশ না হয়ে চারচাকাকেই সঙ্গী করে নিন এ বছর। শরতের ছুটি কাটানোর জন্য কাছে ও দূরে নানা জায়গা আছে। আনন্দবাজার অনলাইনে থাকছে সড়কপথে ভ্রমণের চেনা-অচেনা নানা ঠিকানা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:২৪
পুজোয় চলুন ঘোডাহাড়ার রূপ দর্শনে। বাড়তি পাওনা হবে কুমীর দেখা।

পুজোয় চলুন ঘোডাহাড়ার রূপ দর্শনে। বাড়তি পাওনা হবে কুমীর দেখা।

ঘুম ভাঙল আর জানলা দিয়েই দেখতে পেলেন সামনে উন্মুক্ত আকাশ, ঢেউখেলানো পাহাড় আর সুন্দর একটি জলাধার! কেমন লাগবে? এক ছুটে চলে যেতে চাইবেন পাহাড়ের কাছে?

Advertisement

এগিয়ে আসছে পুজো। আর বর্ষা শেষে পূর্বঘাটের শ্যামলিমা নিয়ে অপেক্ষা করছে ওড়িশা। ট্রেনের টিকিট না পেলেও চিন্তা নেই, পুজোর সময় চারচাকাকে সঙ্গী করে বেরিয়ে পড়তে পারেন পাহাড়, জঙ্গল, বাঁধ, হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগে।

ওড়িশার গঞ্জাম জেলার দিগাপাহান্ডিতে রয়েছে ঘোডাহাড়া বাঁধ। সেখানে রয়েছে এমনই এক আস্তানা, যেখানে ঘরে বসেই উপভোগ করা যায় প্রকৃতির সৌন্দর্য।

কলকাতা থেকে গাড়িতে গেলে যাত্রাপথ বেশ লম্বাই হবে। তবে কখনও শহর, কখনও প্রকৃতি, আবার কখনও মুখরোচক খাবারে স্বাদকোরককে তুষ্ট করে আড্ডা মারতে মারতেই এগিয়ে চলতে মন্দ লাগবে না। কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর পার করে, খুরদা হয়ে গঞ্জাম। একটানা যাত্রা না করে ভেঙে ভেঙেও যেতে পারেন।

ভুবনেশ্বর, খুরদা জেলায় বরকুল, কিংবা গঞ্জাম জেলার রম্ভা, রাত্রিবাসের জন্য যে কোনও জায়গাই উপযুক্ত। চিল্কা হ্রদের ধারেই বরকুল ও রম্ভায় থাকার জন্য রয়েছে ওড়িশা পর্যটন দফতরের পান্থনিবাস।তবে পুজোর সময় এই সমস্ত জায়গায় পর্যটকদের বেশ ভিড় থাকে। তাই আগাম বুকিং না করে গেলে সমস্যা হতে পারে।

বরকুল ও রম্ভা দু’টি জায়গা থেকেই উপভোগ করা যায় পাহাড় ঘেরা সুবিশাল চিল্কার সৌন্দর্য। হাতে কয়েক ঘণ্টা সময় থাকলে বরকুল থেকে নৌকো ভ্রমণে ঘুরে নিতে পারেন কালীযাই মন্দির। জলের মধ্যে রয়েছে ছোট্ট দ্বীপ। সেখানেই কালীযাই মাতার পুজো হয়। রম্ভা থেকেও ভেসে বেড়ানো যায় চিল্কার বুকে। দেখে নেওয়া যায় ব্রেকফাস্ট আইল্যান্ড, বার্ডস আইল্যান্ড।

পছন্দের যে কোনও জায়গা ঘুরে ফের গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়তে পারেন ঘোডাহাড়ার উদ্দেশে। ব্রহ্মপুর হয়ে যেতে হবে সেখানে।পথেই পড়বে সবুজ ঢেউখেলানো পাহাড়, চাষের ক্ষেত। প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতে করতেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে। ঘোডাহাড়া বাঁধ ঘিরে রয়েছে পাহাড়। শান্ত জায়গাটি ছবির মতো সুন্দর।

তবে বাঁধের স্বচ্ছ জল দেখে ভুলেও নেমে পড়ার চেষ্টা করবেন না। কারণ, এখানে কুমিরদের বাস। এক-আধটা নয়, শেষ সুমারির তথ্য বলছে, এই বাঁধে ৫৮টি বড় কুমির রয়েছে। অপেক্ষা করলে কুমিরের দর্শনও হবে। তবে কুমির থাকলেও নৌকা করে ভেসে পড়া যাবে বাঁধের জলে।

যেতে কত ক্ষণ সময় লাগবে?

কলকাতা থেকে ঘোডাহাড়ার দূরত্ব ৬৬১ কিলোমিটার। একটানা গাড়ি চালালেও পৌঁছতে অন্তত ১৩-১৪ ঘণ্টা লাগবে। লম্বা যাত্রা একবারে না করতে চাইলে কটক, ভুবনেশ্বর, বালুগাঁওতে রাত্রিবাস করতে পারেন। থাকতে পারেন বরকুলেও।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে গাড়িতে বালেশ্বর হয়ে ভদ্রক-কটকের রাস্তা ধরে ভুবনেশ্বর। সেখান থেকে খুরদা, গঞ্জাম হয়ে ব্রহ্মপুর। ব্রহ্মপুর থেকে ঘোডাহাড়া বাঁধ।

কোথায় থাকবেন?

থাকার জন্য ওড়িশা বন্নোনয়ম নিগমের ‘ঘোডাহাড়া নেচার ক্যাম্প’ রয়েছে বাঁধের একেবারে পাশেই। ঘরের বড় বড় কাচের জানলা দিয়ে বাঁধ ও পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

আর কী দেখবেন?

ঘোডাহাড়া থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে উজ্জ্বলেশ্বর মন্দির। এখানে আরাধ্য মহাদেব। ঘুরে নিতে পারেন মনকরডিহা জলপ্রপাত। ঝর্নায় যাওয়ার রাস্তাটি সবুজে ঢাকা। পাহাড় এসে মিশেছে সেই পথে। গন্তব্যে পৌঁছে বেশ কিছুটা হাঁটতে হবে জলপ্রপাতের কাছ পর্যন্ত যেতে।

আরও পড়ুন
Advertisement