লাংসেলের তাপমাত্রা সবচেয়ে আকর্ষণের। না খুব ঠান্ডা, আবার না খুব গরম। ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায় কোথায় যাওয়া হবে, তাই নিয়ে এক দীর্ঘ আলোচনা চলে। কারও পছন্দ সমুদ্র তো কারও মন পড়ে আছে জঙ্গলে। বিয়ের পর্ব মিটে গেলেও মধুচন্দ্রিমার জায়গা আর ঠিক করা হয় না। জীবনসঙ্গীর হাতে হাত রেখে জীবনের নতুন পর্বের শুরুটা যদি পাহাড় থেকে করতে চান, তা হলে বেছে নিতে পারেন কালিম্পংয়ের ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম লাংসেল।
জলপাইগুড়ি থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে লাংসেলের । পাথরঝোড়া চা বাগান থেকে ১২ কিলোমিটার চড়াই রাস্তা পার হয়ে তবে পৌঁছতে হবে এই গ্রামে। লাংসেলের তাপমাত্রা সবচেয়ে আকর্ষণের। না খুব ঠান্ডা আবার না খুব গরম। সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় করতে এমন আবহাওয়ার জুড়ি মেলা ভার। চারদিকে পাহাড় দিয়ে ঘেরা এই গ্রাম। পাহাড় বেয়ে নেমে আসছে ঝর্নার জল। লাংসেলের প্রতিটি রাস্তা কাঁচা। পাহাড়ের গায়ে এমন সাজানো-গোছানো গ্রাম যে থাকতে পারে, এখানে না এলে তা বোঝা যাবে না। লাংসেল পায়ে হেঁটে ঘোরার জন্য আদর্শ। কিংবা ছোট ছোট ট্রেকও করতে পারেন। মন্দ হবে না।
লাংসেলকে বেড় দিয়ে বয়ে চলেছে নাম না-জানা পাহাড়ি নদী। চারপাশে সবুজের সমারোহ। নির্জন গ্রাম। পাহাড়ি নদী আর পাখির কলতানে মাঝেমাঝে ব্যাকুল হয়ে উঠতে পারেন। গোটা গ্রাম জুড়ে ছিমছাম কাঠের ঘর। আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। সঙ্গীর হাত ধরে হারিয়ে যেতে পারেন সেই পাহাড়ি পরিবেশে। নানা ধরনের পাহাড়ি ফুল চারপাশটা রঙিন করে তুলেছে। মাঝেমাঝে মনে হবে কেউ যেন সব রং একসঙ্গে সাদা ক্যানভ্যাসে ছুঁড়ে দিয়েছে।
লাংসেলের পরিবেশে মন শান্ত হয়ে যাবে। রাতে ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ আর মিটিমিটি আলোয় ভরে যাবে মন। এখানকার অন্যতম একটি আকর্ষণের জায়গা হল এলাচের বাগান। লুনসেনে এলে সেখানে যেতেই হবে। লাংসেলের পাশেই আরও একটি গ্রাম রয়েছে ঝান্ডি। লাংসেল থেকে সেখানকার দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে। ঝান্ডি থেকে সূর্যোদয় দেখলে মন ভরে যাবে।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে দূরপাল্লার ট্রেনে করে নামতে হবে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে কালিম্পং। আবার সেখান থেকে আরও একটি গাড়িতে অল্প কিছু ক্ষণের পথ গেলেই পৌঁছবেন লাংসেলে।
কোথায় থাকবেন?
লাংসেলে বেশ কয়েকটি সুন্দর হোমস্টে রয়েছে। যাওয়ার আগে সেগুলির মধ্যে কোনও একটি বেছে নিতে পারেন।